করে সুবিধা হয়তো সঞ্চয় আর স্বাস্থ্য বিমায়

ডাকঘর এবং ব্যাঙ্ক আমানতে সুদ তলানিতে ঠেকার এই সময়ে আয়করে কিছুটা বাড়তি সুবিধার আশা করতে পারেন পেনশনভোগী বয়স্ক নাগরিকরাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২১ ১১:১৫
Share:

সামান্য বাড়তি কর ছাড়ের সুবিধা মিলতে পারে ৮০সি ধারায় সঞ্চয় আর স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে।

কোভিড-কষ্টে বছর ঘোরার পরে ফের দরজায় কড়া নাড়ছে বাজেট। আয়করের বোঝা কি কিছুটা হলেও কমবে? নাকি কোনও সুরাহা মিলবে না? প্রতি বছরের মতো আমজনতার মনে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এ বারও। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে খবর, আয়কর কাঠামোর বিশেষ রদবদল সম্ভবত হবে না। কিন্তু সামান্য বাড়তি কর ছাড়ের সুবিধা মিলতে পারে ৮০সি ধারায় সঞ্চয় আর স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে। ডাকঘর এবং ব্যাঙ্ক আমানতে সুদ তলানিতে ঠেকার এই সময়ে আয়করে কিছুটা বাড়তি সুবিধার আশা করতে পারেন পেনশনভোগী বয়স্ক নাগরিকরাও।

Advertisement

অর্থনীতিবিদদের অনেকেরই দাবি, ২.৫ লক্ষের বদলে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করযোগ্য আয়কে আয়করের আওতার বাইরে রাখা হোক। যুক্তি, তাতে সাধারণ মানুষের হাতে খরচ করার জন্য বেশি টাকা থাকবে। তার দরুন চাহিদা বাড়লে, চাঙ্গা হবে অর্থনীতি। কোভিড, লকডাউনের জেরে বহু জনের আয় কমেছে। কিছুটা সুরাহা হবে তাঁদেরও। কিন্তু সমস্যা হল, লকডাউন আর ঝিমিয়ে থাকা অর্থনীতিতে কেন্দ্রের রাজস্ব আদায় ধাক্কা খেয়েছে। তার উপরে আয়করে বড়সড় ছাড় দিলে, আগামী অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি সামলানো দায় হবে।

এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, আয়কর-কাঠামোয় রদবদল না-হলেও, ৮০সি ধারায় সঞ্চয়ের (পিএফ, পিপিএফ, জীবনবিমা ইত্যাদি) যে অঙ্কে কর ছাড়ের সুবিধা মেলে, তার ঊর্ধ্বসীমা ১.৫ লক্ষ থেকে বেড়ে হতে পারে ২ লক্ষ টাকা। বাড়ি, ফ্ল্যাট কেনায় ঋণের ক্ষেত্রেও বাড়তি কর ছাড় মিলতে পারে। অর্থমন্ত্রীকে রাজস্ব দফতরের প্রস্তাব, অপেক্ষাকৃত কম দামের বাড়ি কেনায় উৎসাহ দিতে বাড়তি কর ছাড় দেওয়া যেতে পারে।

Advertisement

গত বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আয়কর দেওয়ার নতুন বিকল্প চালু করেছিলেন। দুই ব্যবস্থাতেই ২.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত। ২.৫ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর ৫%। কিন্তু গত বার চালু হওয়া নতুন বিকল্পে ৫ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মধ্যে আয়ে নতুন হারে কর গোনার রাস্তা খুলে দেওয়া হয়। ৫ থেকে ৭.৫ লক্ষ টাকা আয়ে কর ২০ শতাংশের বদলে ১০%। কিন্তু তেমনই নতুন বিকল্পের সুযোগে কম হারে কর দিলে, ১০০টির মধ্যে ৭০টি করছাড়ের সুযোগই নেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেন নির্মলা। এ বারও দুই কর-কাঠামোয় বিশেষ রদবদলের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

তবে কিছুটা সুরাহা মিলতে পারে স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে। আয়কর আইনের ৮০ডি ধারায় তার প্রিমিয়ামে কর ছাড় মেলে। আয়করদাতা তাঁর নিজের কিংবা পরিবারের জন্য ওই প্রিমিয়াম দিলে ছাড় চাইতে পারেন। মন্ত্রক সূত্রের খবর, এই ছাড়ের আওতা বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।

এখন স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে বয়স এবং পরিবারের সদস্য সংখ্যা অনুযায়ী ২৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অঙ্কে কর ছাড় পাওয়া যায়। কিন্তু কোভিডের সময়ে দেখা গিয়েছে, ওই প্রিমিয়ামে যত টাকার কভারেজ মেলে, অনেক সময়ই বিমাকারী এবং তাঁর পরিবারের জন্য তা যথেষ্ট হচ্ছে না। তাই ওই প্রিমিয়ামের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধির কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন মন্ত্রকের কর্তারা। যুক্তি, তাতে সাধারণ মানুষ আরও বেশি টাকার স্বাস্থ্য বিমা করাতে উৎসাহিত হবেন। বয়স্ক, পেনশনভোগীদের জন্য ছাড়ের পরিধি বাড়াতে জাতীয় পেনশন প্রকল্পে (এনপিএস) কিছু রদবদল হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন