খালি যায় ট্রেন, সেই রুটেই বুলেট

ওই রুটে দ্রুতগামী ও বেশি ভাড়ার ট্রেন শতাব্দী এক্সপ্রেস। রেলের পরিসংখ্যান বলছে, কিন্তু গত তিন মাসে সেই ট্রেনে খালি গিয়েছে অর্ধেকের বেশি আসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি।

দৌড়ের আগেই প্রশ্ন উঠে গেল তার ভবিষ্যত নিয়ে।

Advertisement

লাভজনক রুট যুক্তি দিয়ে মুম্বই ও অমদাবাদের মধ্যে বুলেট ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত সেপ্টেম্বর মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের উপস্থিতিতে ওই প্রকল্পের শিলান্যাসও করেন মোদী। কিন্তু রেলের রিপোর্ট বলছে, বুলেট ট্রেন তো অনেক দূরের ব্যাপার। ওই দুই শহরের মধ্যে সাধারণ যে ট্রেন চলাচল, তাতেই কোনও লোক হয় না। প্রায় খালি যায় ট্রেনের আসন।

ওই রুটে দ্রুতগামী ও বেশি ভাড়ার ট্রেন শতাব্দী এক্সপ্রেস। রেলের পরিসংখ্যান বলছে, কিন্তু গত তিন মাসে সেই ট্রেনে খালি গিয়েছে অর্ধেকের বেশি আসন। শুধু শতাব্দীই নয়, গত তিন মাসে ওই রুটে অন্য ট্রেনেও প্রায় ৪০ শতাংশ আসন খালি গিয়েছে। যার ফলে রেলের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি। তথ্যের অধিকার আইনে এই খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এখন মাথায় হাত রেলকর্তাদের।

Advertisement

ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই দেশবাসীকে বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন দেখিয়ে আসছেন মোদী। ডিসেম্বরে গুজরাতে ভোট। তার কয়েক মাস আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে প্রকল্পের শিলান্যাস করেন তিনি। প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ওই প্রকল্পে ৫০৮ কিলোমিটার দূরত্ব পেরোতে বুলেট ট্রেনের সময় লাগবে প্রায় তিন ঘণ্টা। রেল মন্ত্রকের আশা, বুলেট ট্রেন চালু হলে দুই শহরের মধ্যে যারা বিমানে যাতায়াত করেন তারা নতুন ট্রেনের সওয়ারি হবেন। রেলের দাবি ৩৭৫ আসনের বুলটে ট্রেনের কোনও আসন খালি যাবে না।

কিন্তু গত তিন মাসে ওই রুটে ট্রেনের যাত্রী সংখ্যার যে পরিসংখ্যান সামনে উঠে এসেছে তাতে চমকে উঠেছে রেল মন্ত্রক। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে মুম্বই-অমদাবাদ রুটে যে ৩২টি গাড়ি চলে তাতে প্রায় ৭.৩৫ লক্ষ বসার আসনের মধ্যে বুকিং হয়েছে মাত্র ৪.৪১ লক্ষ আসন। স্লিপার শ্রেণি ভরা থাকলেও, একেবারে খালি গিয়েছে এসি কামরাগুলি।

রেলের অফিসারদের একটি বড় অংশ শুরু থেকেই বুলেট ট্রেনের বিরোধিতা করে এসেছেন। ওই প্রকল্পের জন্য জাপানের কাছ থেকে প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে হয়েছে। বুলেট ট্রেন-বিরোধী শিবিরের মতে, ওই টাকা দিয়ে
রেলের বর্তমান পরিকাঠামোর খোলনলচে বদলে ফেলা যেত। তাতে গোটা দেশের রেলের লাভ হতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প হওয়ায় এ নিয়ে এখন চুপ সেই বিরোধীরা।

গোটা বিষয়টি নিয়ে সরকারি ভাবে রেলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বুলেট ট্রেনের লড়াই বিমানের সঙ্গে। বিমানের চেয়ে বুলেট ট্রেনের ভাড়া কম রাখা হবে। তাই যাত্রী পেতে কোনও সমস্যা হবে না বুলেট ট্রেনে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন