সুদিনের লক্ষ্যে ‘রোড ম্যাপ’ দিচ্ছে সব মন্ত্রক

উত্তরপ্রদেশের জেতার পর থেকেই মোদী নতুন নিশানা করেছেন ২০২২-কে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর কেন্দ্র ‘নতুন ভারত’ গঠনের স্বপ্ন ফেরি করতে শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০৩:১৫
Share:

লক্ষ্য ২০২২— স্বাধীনতার ৭৫ বছর। তাই বর্তমান সরকারের বাকি দু’বছর মেয়াদের কথা ভুলে সব মন্ত্রককে এখনই আগামী পাঁচ বছরের রোড ম্যাপ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশের জেতার পর থেকেই মোদী নতুন নিশানা করেছেন ২০২২-কে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর কেন্দ্র ‘নতুন ভারত’ গঠনের স্বপ্ন ফেরি করতে শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও বিরোধীদের কটাক্ষ, সামনে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন পেরিয়ে যে ২০২২-এ পৌঁছতে হবে, সেটাই ভুলে যাচ্ছেন মোদী। ভাবখানা এমন যে উত্তরপ্রদেশে জিতেই যেন আগামী লোকসভা নির্বাচনের বাধা টপকে গিয়েছে তাঁর দল।

আর তাই তিন বছরের মাথাতেই নতুন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছেন তিনি। বিরোধী শিবিরের কটাক্ষ, তিন বছরে মোদী সুদিন তো আনতেই পারেননি, ২০১৪ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলিরও কিছুই পূরণ হয়নি। আর সেটা বুঝেই সুদিন আনার মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়ে দেশেবাসীকে ‘বোকা’ বানাতে চাইছেন তিনি।

Advertisement

বিরোধীদের সমালোচনার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আগামী পাঁচ বছরের রিপোর্ট জমা দিয়ে দিয়েছেন সুরেশ প্রভু, রাধামোহন সিংহ, পীযূষ গয়াল, বেঙ্কাইয়া নায়ডুরা। রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে অন্য মন্ত্রকগুলিতেও।

আরও পড়ুন: সুষমা-ছোঁয়ায় ভিসা, আপ্লুত পাক বাবা

আগামী পাঁচ বছরে কৃষকদের আর্থিক বিকাশে জোর দিতে চাইছেন সরকার। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ মূলত কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার উপরেই জোর দিতে চেয়েছেন। রাধামোহনের মতে— কৃষিঋণ মাফ করলেই আয় বাড়ে না। ফসলের উৎপাদন বাড়ানো, বীজের দাম কমানো, কৃষিজাত পণ্যের বাজার তৈরি করা, ফসল-বিমার মতো সংস্কারমুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব। একই সঙ্গে আগামী পাঁচ বছরে দেশের সমস্ত কৃষিজমিকে সেচের আওতায় আনা, সয়েল কার্ড তৈরি করা ও সব কৃষককে ফসল বিমার আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষি মন্ত্রক। রেলের ক্ষেত্রে আগামী পাঁচ বছরে গোটা দেশে ‘গতিমান’-এর মতো সেমি হাইস্পিড ট্রেন চালানো, আলাদা পণ্য পরিবাহী করিডর, প্রতি ট্রেন ও স্টেশনে বায়ো টয়লেট ও ওয়াইফাই ব্যবস্থা, নিরাপত্তা খাতে আধুনিকীকরণ ও নতুন কোচ বানানোর মতো কাজে প্রায় সাড়ে আট লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই টাকার মধ্যে ৩০ শতাংশ আসবে কেন্দ্রীয় কোষাগার থেকে। বেঙ্কাইয়া নায়ডুর স্বপ্ন হল সবার জন্য ঘর প্রকল্প। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে এই কাজ সফল করতে চায় তাঁর নগরোন্নন মন্ত্রক। ২০১৯ সালের মধ্যে ১০০টি ও পরের তিন বছরে আরও ১০০টি স্মার্ট শহর গড়ার পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর।

আবার দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। আগামী পাঁচ বছরে কয়লা, বিদ্যুৎ ও অপ্রচলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে প্রায় ২৫ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ হবে বলে দাবি গয়ালের। এর একটি বড় অংশ বিনিয়োগ হবে অপ্রচলিত শক্তি খাতে। বর্তমানে অপ্রচলিত উৎস থেকে যে ৬০০০ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। আগামী পাঁচ বছরে সেটিকে পাঁচগুণ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এই বিদ্যুতের একটি বড় অংশ আসবে সূর্যালোক থেকে। ২০২২ সালের মধ্যে অপ্রচলিত উৎস থেকে উৎপাদিত হবে প্রায় ১ লক্ষ ৭৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। যার মধ্যে অন্তত এক লক্ষ ইউনিট আসবে সূর্যের আলো থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন