বাংলা-ওডিশা পেলে ‘স্বর্ণযুগ’, অমিত-খোঁচা, সাপে নেউলে সঙ্গী ভোটে!

বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এখানে এক অনুষ্ঠানে দলের সভাপতি অমিত শাহ আজ বিরোধীদের জোট বাধার চেষ্টাকে বিদ্রুপ করে বলেন, ‘‘দেশে মোদীজির বান এসেছে। তার ভয়ে কুকুর-বেড়াল-ইঁদুর-সাপ-নেউল সব এক হয়ে ভোটে লড়ছে।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৫
Share:

নেতৃবৃন্দ: বিজেপির ৩৮তম প্রতিষ্ঠা দিবসে সভাপতি অমিত শাহ। মুম্বইয়ে শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

একই কথার এ-পিঠ ও-পিঠ। তাই নিয়েই জোর তরজা বিজেপি ও বিরোধী শিবিরে।

Advertisement

বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এখানে এক অনুষ্ঠানে দলের সভাপতি অমিত শাহ আজ বিরোধীদের জোট বাধার চেষ্টাকে বিদ্রুপ করে বলেন, ‘‘দেশে মোদীজির বান এসেছে। তার ভয়ে কুকুর-বেড়াল-ইঁদুর-সাপ-নেউল সব এক হয়ে ভোটে লড়ছে।’’ এটা ঘটনা, পরস্পরের শত্রু হলেও বন্যার সময়ে সাপে-নেউলে এক গাছে আশ্রয় নিয়ে থাকে। তার সঙ্গে বিরোধীদের জোট বাধার চেষ্টার তুলনা করে বিজেপি সভাপতি হয়তো দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করতে চেয়েছিলেন। বাস্তবে তা কতটা হল, সে প্রশ্ন আলাদা। তবে তাঁর ওই মন্তব্যই আজ বিরোধীদের উস্কে দিল পাল্টা আক্রমণে মুখিয়ে উঠতে।

অমিত ওই কথা বলার কিছু ক্ষণের মধ্যেই কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা টুইটারে তাঁর নাম করে লেখেন, ‘বন্যা প্রলয় ঘটায়। সব কিছু ধ্বংস করে। মোদী-শাহ জুটিও দেশের কৃষক, বেকার যুবক, দলিত-আদিবাসী, দোকানদার, উদ্যোগপতিদের বরবাদ করে দিয়েছে।’ এর পরেই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘ভুলবেন না, বন্যার ত্রাস অল্প সময়ের। আমরা সব ভারতীয় মিলে ভ্রাতৃত্বের বাঁধ গড়ে এই ত্রাসকে চিরতরে রুখে দেব।’ বিরোধী নেতারা এমন কটাক্ষও ছোড়েন, কংস বধের জন্য কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল প্রলয়ের রাতেই। কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘এটা নিন্দনীয়। এতে শাহর মানসিকতাই প্রকাশ পেয়েছে। বারবার ওঁরা রাজনীতিকে নীচতার নতুন মাত্রায় নামিয়ে এনেছেন। এটা ওদের ডিএনএ-তে রয়েছে।’’ তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘আমরা রাজনৈতিক বিরোধী বটে। ক্ষমতাসীন জাতীয় দলের সভাপতির কাছ থেকে এটাই কি আমরা আশা করি! ন্যূনতম সৌজন্যতাটুকুও নেই!’’ সিপিআইয়ের ডি রাজা হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘মানুষ এর উপযুক্ত জবাব দেবেন।’’ আর এনসি-র ওমর আবদুল্লার প্রশ্ন, ‘‘বিজেপি সভাপতি কি তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলেই মনে করছেন?’’ এই মিলিত আক্রমণ অস্বস্তিতেই ফেলে দেয় বিজেপিকে।

Advertisement

অমিতকে তাই পরে বলতে হয়, ‘‘কোনও প্রাণীর সঙ্গে রাজনৈতিক দলের তুলনা করতে চাইনি। আমি শুধু বোঝাতে চেয়েছিলাম, মোদীর ভয়ে এমন সব দল জোট বাঁধছে, যাদের মধ্যে আদর্শগত কোনও মিলই নেই। যেমন, এসপি এবং বিএসপি, তৃণমূল ও কংগ্রেস, চন্দ্রবাবু নায়ডু ও কংগ্রেস।’’ বন্যা থেকে প্রসঙ্গ ঘোরাতে রবিশঙ্কর প্রসাদ টেনে আনেন রোদ ওঠার কথা। মনে করান, ১৯৮০ সালের ৬ এপ্রিল বিজেপির প্রতিষ্ঠার দিনে অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্তব্য— ‘মেঘ কাটবে, সূর্য বেরিয়ে আসবে, পদ্ম ফুটবে।’ এই সূত্রে রবিশঙ্কর উল্লেখ করেন, ‘‘দেশে এখন ২১টি রাজ্যে শরিকদের নিয়ে আমাদের সরকার, ১৫ জন মুখ্যমন্ত্রী।’’ অমিতের মুখেও উঠে আসে বিজেপির সুদিনের কথা। তিনি মনে করান, মাত্র ১০ জনকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বিজেপি। এখন দলটা ১১ কোটির। তবে এখানেই থামছে না দল। অমিতের কথায়, ‘‘বিজেপির স্বর্ণযুগ এখনও আসেনি। বাংলা ও ওডিশায় যখন বিজেপির সরকার হবে, সেটাই হবে বিজেপির প্রকৃত স্বর্ণযুগ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন