কড়া সুপ্রিম কোর্ট, অস্বস্তি শাসকের

দশ দিনে না হলে, ২৪০ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত সেরে ফেলা হোক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৪০
Share:

প্রতীকী ছবি।

দশ দিনে না হলে, ২৪০ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত সেরে ফেলা হোক।

Advertisement

সিবিআই অধিকর্তা অলোক বর্মার বিরুদ্ধে দশ দিনে তদন্ত শেষ করা সম্ভব নয় বলে সদ্য বক্তব্য শেষ করেছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা। তাঁরই কথার পিঠে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর ওই মন্তব্য শুনে কার্যত হচকচিয়ে যান তিনি। হেসে ফেলে গোটা আদালত কক্ষ। পরে অবশ্য দু’সপ্তাহে তদন্ত শেষ করার দিন ধার্য হয়। তবে, তদন্ত কমিটির মাথায় প্রাক্তন বিচারপতি এ কে পট্টনায়ককে বসিয়ে দেয় আদালত।

মাস কয়েক আগে বিচার বিভাগে সরকারি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে যে চার জন বিচারপতি সরব হয়েছিলেন তাঁর অন্যতম ছিলেন বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। সেই রঞ্জন গগৈ প্রধান বিচারপতি হওয়ার পরে আজই সরকারের প্রথম বড় পরীক্ষা ছিল সুপ্রিম কোর্টে। আর প্রথম মামলাতেই যে ভাবে সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন তিনি, তা দেখে মুচকি হাসছেন কংগ্রেস নেতারা। এক কংগ্রেস নেতার কথায়, ‘‘আগের জামানা আর নেই।
সুপ্রিম কোর্ট কী, তা এ বার টের পাবে মোদী সরকার।’’

Advertisement

কংগ্রেসের মতে, রাকেশ আস্থানা ও অলোক বর্মাকে ছুটিয়ে পাঠিয়ে নিজের লোককে বসিয়ে কার্যসিদ্ধি করতে চেয়েছিল সরকার। পরিকল্পনা ছিল, অলোক বর্মার তিন মাস পরেই ইস্তফা। নরেন্দ্র মোদী চেয়েছিলে তত দিন পর্যন্ত তদন্ত ঝুলিয়ে রাখবেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট আজ বুঝিয়ে দিল, বিষয়টির সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ জড়িত। তাই এত দিন ফেলে রাখা যাবে না। শুধু তাই নয় সিভিসি-র উপর নজরদারি করার জন্য এক জন প্রাক্তন বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছে। উপরন্তু বর্মার পরিবর্তে দায়িত্ব নেওয়া এম নাগেশ্বর রাওয়ের দায়িত্বের গণ্ডিও টেনে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সব মিলিয়ে সিবিআইয়ের অভ্যন্তরীণ দ্বৈরথ কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের অবস্থানে রীতিমতো অস্বস্তিতে শাসক দল বিজেপি।

রাহুল আজ সরাসরি এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। কিন্তু অন্য নেতারা আজ ছেড়ে কথা বলেননি মোদীকে। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘সত্যের জয় হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। যে একনায়ক সিবিআইয়ের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন, আজকের রায় তার মুখে একটা চড় ছাড়া কিছু নয়। এমনকী ওই তদন্তে সিভিসি-ও আর মোদীর কথায় কাজ করবে না।’’

আজকের রায় শাসক শিবিরে অস্বস্তি বাড়ালেও প্রকাশ্যে ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অরুণ জেটলি। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি দাবি করেছেন, এটা সরকারের জয়। সরকারও চাই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসুক। তাঁর কথায়, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করা অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ। দেশের স্বার্থেই সত্য প্রকাশ হওয়া উচিত। সিবিআইয়ের অফিসারদের বিশেষ করে শীর্ষ পদাধিকারীরা হলেন সিজারের স্ত্রী-র মতো। সমস্ত সন্দেহের ঊর্ধ্বে থাকা উচিত তাঁদের।’’ কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের দাবি, মুখে জেটলি ওই দাবি করলেও, সুপ্রিম কোর্টের এক সিদ্ধান্তে মাত হয়েছেন শাসক শিবির। ভেস্তে গিয়েছে সরকারের সব পরিকল্পনা। এমনকী এই রায়ের পরে সিবিআইকে দিয়ে ইচ্ছেমতো কাজ করাতেও পারবেন না অমিত শাহেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন