সিবিআইয়ের অন্দরের অশান্তিতে ‘উদ্বিগ্ন’ দেশের প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা তথা এ রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। এই গোলমালের নেপথ্যে ডিরেক্টর নির্বাচন ঘিরে যে নয়া পন্থা অবলবম্বন করা হচ্ছে, তাকেই দায়ী করলেন তিনি।
মঙ্গলবার কলকাতায় বণিকসভার এক অনুষ্ঠানে নারায়ণন বলেন, ‘‘সিবিআইয়ে যা হয়েছে তা উদ্বেগের, সন্দেহ নেই। এটাই প্রথম নয়, গত পাঁচ বছরে বার কয়েক একই ঘটনা ঘটেছে। তার আগেও ঘটেছে। আগে এমন হলে ক্যাবিনেট সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব দেশের গোয়েন্দা প্রধানের সাহায্য নিয়ে সমস্যা মিটিয়ে ফেলতেন। এখন তা আর পারা যায় না।’’
নারায়ণন মনে করেন, বিনীত নারায়ণ মামলায় সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তাতেই গোলমাল শুরু হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তদন্তকারী অফিসারের যোগ্যতা কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনার (সিভিসি) ঠিক করতে পারেন না। পাশাপাশি এই যে নির্বাচন কমিটি সিবিআই ডিরেক্টর নির্বাচন করে, সেটিও সঠিক নয়।’’
যদিও প্রশাসনের একটা বড় অংশই মনে করে সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং লোকপাল বিলের পরিপ্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের স্বাধিকার অনেকটাই বেড়েছে। ১৯৯৭ সালের আগে সিবিআইয়ের নিয়ন্ত্রক ছিল কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রক। ফলে সরকারের অঙ্গুলিহেলনে এই সংস্থা চলত বলে মনে করা হত। হাওয়ালা কেলেঙ্কারির পর সুপ্রিম কোর্ট বলে, সিবিআই সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। সিভিসি এর ডিরেক্টর নিয়োগ করবে। ২০১৩ সালে লোকপাল বিলে সিবিআই ডিরেক্টর নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে কমিটি তৈরি হয়। নারায়ণন অবশ্য পুরনো প্রথা মেনেই নিয়োগের পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন।
মনমোহন সিংহের জমানায় ২০০৫ থেকে ২০১০ পর্যম্ত দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন নারায়ণন। সম্প্রতি মনমোহন-জমানা নিয়ে তৈরি সিনেমা ‘অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’-এ তাঁর ভূমিকা নিয়ে নানা কথা বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মিথ্যায় ভরা একটা বই। ৮০% তথ্যই মিথ্যা। টাকা রোজগারের জন্য বই লেখা হয়েছে। রোজগারও ভালই হয়েছে।’’
নারায়ণন অবশ্য রাফাল বিতর্ক নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘এটা রাজনৈতিক বিষয়। এ নিয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই।’’