আপাতত ‘ছুটি’, কলকাতায় ফিরে এলেন রাজীব

সিবিআইয়ের খবর, ৩ ফেব্রুয়ারি রাজীবের বাড়িতে যাওয়া সিবিআই অফিসারদের আটকানো নিয়ে তাঁর কাছে হলফনামা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ১৮ তারিখ সেই হলফনামা জমা দেওয়ার কথা।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ ও রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শিলং শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:২৪
Share:

ফেরা: কলকাতা বিমানবন্দরে রাজীব কুমার। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে প্রথম দফার জিজ্ঞাসাবাদে ইতি টানল সিবিআই। আজ অন্য দিনের তুলনায় একটু তাড়াতাড়ি, সকাল সাড়ে ন’টাতেই ওকল্যান্ডে সিবিআই দফতরে ঢুকে পড়েন রাজীব। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ বেরিয়ে সোজা চলে যান বিমানবন্দরে। দুপুরের উড়ানেই পাড়ি দেন কলকাতা। সন্ধ্যায় দমদমে নেমে বাড়ি চলে যান তিনি।

Advertisement

সিবিআইয়ের খবর, ৩ ফেব্রুয়ারি রাজীবের বাড়িতে যাওয়া সিবিআই অফিসারদের আটকানো নিয়ে তাঁর কাছে হলফনামা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ১৮ তারিখ সেই হলফনামা জমা দেওয়ার কথা। তা তৈরি করার সময় দিতেই আপাতত জিজ্ঞাসাবাদে বিরতি টানা হল। প্রয়োজনে ফের তাঁকে সিবিআই তদন্তকারীদের সামনে হাজির হওয়ার অনুরোধ করা হবে।

এ দিকে, সারদা মামলায় রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) আরও দুই সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে সিবিআইয়ের একটি সূত্রের দাবি। বলা হচ্ছে, তাঁরাই নাকি সারদার মিডল্যান্ড পার্কের অফিস থেকে সিসিটিভি ফুটেজ-সহ অন্যান্য নথি বাজেয়াপ্ত করেছিলেন। ওই দুই অফিসারই এখন অবসর নিয়েছেন। সূত্রটি জানাচ্ছে, সারদা মামলায় অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ এবং রাজীবকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় যে সব অফিসারের নাম উঠেছিল, তাঁদের কাউকে কাউকে রবিবার রাতে হোটেল থেকে ফোন করেন রাজীব। সে কথা তিনি স্বীকারও করেছেন। তা ছাড়া, ওই দুই প্রাক্তন অফিসার নিজেরাই সিবিআই-কে ফোন করে সে কথা জানান। সিবিআই সূত্রের খবর, রাজীবের ফোন সম্পর্কে ওই দু’জনের বয়ান নথিভুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া হবে।

Advertisement

আজই সারদা-কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে জেলে গিয়ে জেরা করার অনুমতি চেয়ে বারাসত আদালতে আর্জি জানিয়েছে সিবিআই। তবে কেস ডায়েরি এবং তদন্তকারী অফিসার না-থাকায় শুনানি হয়নি। সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে, দেবযানী এবং সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনকে ফের হেফাজতে নেওয়ার আবেদনও জানানো হতে পারে। তা পাওয়া গেলে কুণালের মতো তাঁদেরও রাজীবের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সম্ভাবনা থাকছে।

কিছু দিন আগে দেবযানী আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সারদার লাল ডায়েরি গায়েব হয়ে গিয়েছে’। এর পর সুদীপ্ত জানান, এমন কোনও ডায়েরির কথা তাঁর জানা নেই। আজ দেবযানীকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও জবাব দেননি।

কুণাল ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেছেন, তিনি সিট-এর হেফাজতে থাকার সময় অনেক অফিসার তাঁকে জানিয়েছিলেন যে, সারদা ও অন্য জায়গা থেকে বাজেয়াপ্ত করা বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি সেই সব অফিসার ও তাঁদের আত্মীয়দের বাড়িতে রাখার নির্দেশ এসেছিল উপর মহল থেকে। কুণালের দাবি, এ দফার জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে তিনি সিবিআই-কে বলেছেন, সেই সব নথিপত্রের মধ্যে প্রধান ছিল শাসক দলের প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে অর্থ লগ্নি সংস্থার মালিক ও অন্য কর্মীদের ছবি। ওই অফিসারদের নামও বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, সেই অফিসারদের খুব শীঘ্রই সিট-এর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন