Pegasus

Pegasus: কমিটিতে যোগে দ্বিধা কি আতঙ্কেই

আপাতত সরকার মুখে কুলুপ আঁটলেও, বিজেপি মুখপাত্রদের দাবি, পেগাসাস নিয়ে অপপ্রচার রুখতে নিরপেক্ষ কমিটি গড়ার আবেদন জানিয়েছিল সরকারই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৪৫
Share:

ফাইল চিত্র।

সংসদে নীরবতা ঢাল ছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও সেই নীরবতাই কৌশল!

Advertisement

শীর্ষ আদালত পেগাসাস-কাণ্ডে কার্যত কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তার পরে চব্বিশ ঘণ্টা কেটে যাওয়া সত্ত্বেও এখনও নীরব মোদী সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দূরের কথা, কেন্দ্রীয় সরকারের টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী বা আইন মন্ত্রীও এ নিয়ে মুখ খোলেননি।

আপাতত সরকার মুখে কুলুপ আঁটলেও, বিজেপি মুখপাত্রদের দাবি, পেগাসাস নিয়ে অপপ্রচার রুখতে নিরপেক্ষ কমিটি গড়ার আবেদন জানিয়েছিল সরকারই। তাই শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্ত স্বাগত। যদিও বাস্তব হল, অপপ্রচার রোখার কমিটি নয়, পুরোদস্তুর তদন্ত কমিটি গড়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিরোধীরা আজ ফের জানিয়েছেন, সংসদে তাঁরা পেগাসাস-কাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে অনড় থাকবেন। নভেম্বরের শেষে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হবে। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীদের দাবি, পেগাসাস নিয়ে প্রথমেই মোদী সরকারকে মুখ খুলতে হবে। সরকারই ইজ়রায়েলের সংস্থার কাছ থেকে পেগাসাস কিনে বিরোধী নেতা, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, শিল্পপতিদের ফোনে আড়ি পেতেছিল কি না, তা নিয়ে কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে মুখ খুলতে চায়নি। বস্তুত জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সরকারের এই এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা দেখেই সুপ্রিম কোর্ট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম আর রবীন্দ্রণের নেতৃত্বে তদন্ত ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করলেও, সুপ্রিম কোর্ট রায়ে জানিয়েছে, কমিটির সদস্য জোগাড়ই কঠিন কাজ ছিল।

অনেকে বিনীত ভাবে শীর্ষ আদালতের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। কেউ স্বার্থের সংঘাতের কথা বলেছেন। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম বলেন, ‘‘আমি সুপ্রিম কোর্টের এই কথায় চিন্তিত। কোনও সচেতন নাগরিক কি এ রকম জাতীয় স্বার্থে গুরুতর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারেন?’’ এর পিছনে সরকারের তৈরি আতঙ্ক ও প্রতিহিংসার মনোভাব দায়ী বলে তাঁর মত। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য, মহাত্মা গাঁধী বলেছিলেন, ভারতীয়দের শাসককে ভয় পাওয়া উচিত নয়। এই অধ্যায় থেকে স্পষ্ট, সেখান থেকে আমরা কত দূরে সরে এসেছি।

বিরোধীদের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টে চুপ থাকলেও, সংসদে সরকার মুখ খুলতে দায়বদ্ধ। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের উপ-দলনেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার বাদল অধিবেশনে পেগাসাস নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকার করেছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে অন্তত সৎ অবস্থান নেওয়া দরকার।’’ তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে বিবৃতি দিতে হবে। তাঁর মতে, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে পেগাসাস স্পাইওয়্যারে ফোনে আড়ি পাতা কাণ্ড যে মাত্রা পেয়েছে, তার পরে আর সরকারের চুপ থাকা চলে না।

কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী শিবির বলছে, পেগাসাস নিয়ে সরকার আলোচনায় রাজি হলে, তার পরে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম, মূল্যবৃদ্ধি, কৃষকদের সমস্যার মতো বিষয়ে বিরোধীরা সরব হবেন।

গত কালই রাহুল গাঁধী বলেন, ইজ়রায়েলের এনএসও থেকে পেগাসাস কেনা হয়েছিল। ফলে দেশের নাগরিকদের ফোনে আড়ি পেতে পাওয়া তথ্য বিদেশে চলে গিয়েছে কি না, সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে। আজ ভারতে ইজ়রায়েলের রাষ্ট্রদূত নায়োর গিলনকে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি একে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করতে চাননি। তবে তিনি ফের স্পষ্ট করেছেন, পেগাসাস শুধু কোনও দেশের সরকারকে বেচা হয়েছিল। গিলন বলেন, এনএসও ইজ়রায়েলের বেসরকারি সংস্থা। কিন্তু ওই জাতীয় সংস্থারও রফতানির জন্য লাইসেন্স প্রয়োজন। ইজ়রায়েল সরকার তা দেয় শুধু অন্য দেশের সরকারের জন্যই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন