Monsoon Session

Monsoon Session: মূল্যবৃদ্ধি-বিতর্কে রাজি, কেন্দ্রের বার্তা বিরোধীদের

বাদল অধিবেশনের অষ্টম দিনে লোকসভা কিছুক্ষণ চললেও, রাজ্যসভা দফায় দফায় মুলতুবি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২২ ০৬:০৮
Share:

মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সংসদ চত্বরে গান্ধীমূর্তির নীচে ধর্নায় তৃণমূল সাংসদেরা। বুধবার নয়াদিল্লিতে। ছবি পিটিআই।

কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি যদি ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ না দেখায় তা হলে মূল্যবৃদ্ধি, জিএসটি-সহ সব বিষয়ে আলোচনায় রাজি সরকার। সূত্রের মতে, প্রয়োজনে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে আগামী সোমবার থেকে সুষ্ঠু ভাবে অধিবেশন চালানোর পক্ষপাতী শাসক শিবির। সূত্রের খবর, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে সরকার এবং বিরোধী দলগুলি একমত হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট দিন আলোচনা করে স্থির করা হবে।

Advertisement

আজ বাদল অধিবেশনের অষ্টম দিনে লোকসভা কিছুক্ষণ চললেও, রাজ্যসভা দফায় দফায় মুলতুবি হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, জিনিসপত্রের চড়া দাম, মূল্যস্ফীতির হার, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বর্ধিত জিএসটির মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা হলে সরকারের মুখ পুড়তে পারে, তাই আলোচনা এড়াতেই এ ভাবে ফি দিনের অধিবেশন বানচালের কৌশল নিয়েছে শাসক শিবির। আলোচনা এড়ানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হলেই বিরোধী সাংসদদের সাসপেন্ড করে ঝামেলা জিইয়ে রাখার কৌশল নিয়েছে সরকার, এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের। কংগ্রেস সাংসদ সচিন পাইলটের কথায়, ‘‘এক দিকে সংসদে এই সরকার কোনও আলোচনা চায় না। অন্য দিকে, সংসদের বাইরে তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে সনিয়া গান্ধীকে অপদস্থ করার চেষ্টা চলছে। কংগ্রেস যখন সরকারে ছিল তখনও বিরোধীরা ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ জানাতেন, সে সময়ে কিন্তু তাঁদের সাসপেন্ড করা হত না।’’ সব মিলিয়ে রাজ্যসভায় বাদল অধিবেশনে এ পর্যন্ত ২৪ জন সাংসদ সাসপেন্ড হয়েছেন। সরকারের যুক্তি, অধিবেশনে ক্রমাগত বাধা সৃষ্টি করায় ওই সাংসদদের সাসপেন্ড করা ছাড়া উপায় ছিল না। রাতে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী জানান, সাসপেন্ড হওয়া সাংসদেরা যদি আশ্বাস দেন যে ভবিষ্যতে তাঁরা কোনও গোলমাল করবেন না, তা হলে তাঁদের শাস্তি পুনরায় বিবেচনা করা হবে।

বিজেপি নেতাদের মতে, তাঁরা চান সংসদে সব বিষয়ে আলোচনা হোক। কিন্তু আলোচনার সময়ে বিরোধীরা যাতে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ না দেখান, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে চাইছে শাসক শিবির। রাজ্যসভার দলেনেতা পীযূষ গয়ালের কথায়,, ‘‘বিরোধীদের জানিয়ে দিয়েছি আমরা আলোচনা চাই। কিন্তু কংগ্রেসের মতো কিছু বিরোধী দলের ব্যক্তিগত অ্যাজেন্ডার কারণে অধিবেশন বাতিল করে দিতে হচ্ছে। এতে সংসদে আলোচনা বা প্রশ্ন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অন্য ছোট দলের প্রতিনিধিরা।’’ বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, রাহুল-সনিয়া গান্ধীকে কেন তদন্তকারী সংস্থা ডেকেছে সেই অজুহাতে আসলে কংগ্রেস শিবির সংসদে অচলাবস্থা তৈরি করে নিজেরাই আলোচনা এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে। অথচ, যেখানে তদন্তের সঙ্গে সংসদের ভন্ডুল করার কোনও সম্পর্কই নেই। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী আজ বলেন, ‘‘রাণী হোক বা যুবরাজ— আইন সকলের জন্য এক। কংগ্রেস নিজেদের আইনের ঊর্ধ্বে ভাবে। যখন তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে, তখন তদন্ত থেকে পালানোর প্রয়োজনটা কী রয়েছে!’’

Advertisement

বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পথে। যে ভাবে ফি দিন অধিবেশন ভন্ডুল হচ্ছে, তাতে অস্বস্তিতে শাসক শিবির। বিজেপি নেতারা বুঝতে পারছেন, আগামী দিনে সংসদ না চালানোর দায় তাঁদের উপরেও পড়তে চলেছে। তাই দ্রুত এই অচলাবস্থা মেটানোর পক্ষপাতী তাঁরা। সূত্রের মতে, সংসদ যাতে আগামী দু’সপ্তাহ সুষ্ঠু ভাবে চলে, সে জন্য সপ্তাহান্তে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার কথা ভাবা হচ্ছে। শাসক শিবিরের এক নেতার কথায়, ‘‘বিরোধীরা যুক্তি দিচ্ছেন, সরকার আলোচনা চাইছে না বলেই সংসদ চালাচ্ছে না। আমরা চাই সংসদে মূল্যস্ফীতির হার, মূল্যবৃদ্ধি কিংবা পেট্রোপণ্যের দাম নিয়ে আলোচনা হোক। তা হলেআমরাও দেখিয়ে দিতে পারব রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতিতে এ দেশে মূল্যবৃদ্ধি অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের তুলনায় অনেক ভাল অবস্থায় রয়েছে।’’ সব মিলিয়ে মূল্যবৃদ্ধি থেকে বেকারত্ব— সব বিষয়েই নিজেদের অবস্থান সংসদে তুলে ধরারপক্ষে সরকারও।

কিন্তু সমস্যা হল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন কোভিডে আক্রান্ত। আগামী সোমবারের মধ্যে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন বলেই আশা করা হচ্ছে। তার পরেই মুল্যবৃদ্ধি-মূল্যস্ফীতি হারের মতো আর্থিক বিষয় নিয়ে সংসদে আলোচনা শুরু হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে শাসক পক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন