Indian Railways

ভোট-বছরে রেল দরাজ, মমতার প্রকল্প তবু ব্রাত্য

বড় প্রকল্পে তেমন টাকা না দিলেও, ডাবলিং বা নতুন লাইনের মতো পরিকাঠামোগত উন্নতির কাজে বরাদ্দ কিছুটা বাড়িয়েছে রেল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিধানসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় বাজেটে সার্বিক ভাবে বরাদ্দ বাড়ল পশ্চিমবঙ্গের। কলকাতা মেট্রোর চারটি থমকে থাকা প্রকল্পের কাজে গতি আনতে এক দিকে যেমন দ্বিগুণ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, তেমনই বুনিয়াদি পরিকাঠামোর উন্নতিতে বরাদ্দ বেড়েছে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলে।

Advertisement

অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্য জুড়ে যে এক ডজনের বেশি রেলের কারখানা গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন, তাদের অধিকাংশের কপালে জুটেছে নামমাত্র অর্থ সাহায্য। কাঁচরাপাড়ায় রেল-কোচ তৈরির নতুন ইউনিটে গত বাজেটে ৭৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হলেও, এ বার তা মাত্র এক হাজার টাকা। টিকিয়াপাড়ার কোচ-রিমডেলিং খাতে বরাদ্দ ৫ লক্ষ টাকা। রানাঘাটে ১৫ কামরার এবং ব্যান্ডেলে ১২ কামরার রেলের রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্রের কপালে একটি টাকাও জোটেনি। লিলুয়ায় এসি ওভারহলিং ইউনিট পেয়েছে এক কোটি টাকা। কাঁচরাপাড়ার ট্র্যাক মেশিন ওভারহলিং ডিপো গত বার সাড়ে তিন কোটি টাকা পেলেও, এ বারে পেয়েছে ১.২৫ কোটি টাকা। সাঁতরাগাছির ইলেকট্রিক লোকোশেড রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র গত বছর ১.৩৫ কোটি টাকা পেলেও, এ বার প্রাপ্তির ঘর শূন্য। খড়্গপুর ওয়াগন ওয়ার্কশপ গতবার দু’কোটি টাকা পেয়েছিল। এ বার একটি টাকাও জোটেনি।

বড় প্রকল্পে তেমন টাকা না দিলেও, ডাবলিং বা নতুন লাইনের মতো পরিকাঠামোগত উন্নতির কাজে বরাদ্দ কিছুটা বাড়িয়েছে রেল। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জন্য ৬,১২০ কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি প্রকল্পে দ্বিতীয় লাইন এবং তৃতীয় লাইন তৈরির ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য হারে বরাদ্দ বেড়েছে বলে দাবি। সূত্রের খবর, পুরুলিয়া-কোটসিলা ৩৬ কিলোমিটার ডাবল লাইন প্রকল্পে এ বার ৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। গত বার বাজেটে ওই প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছিল।

Advertisement

রেল কর্তারা জানিয়েছেন, খড়্গপুর-আদিত্যপুর এবং নারায়ণগড়-ভদ্রকের মধ্যে তৃতীয় লাইন নির্মাণ প্রকল্পে যথাক্রমে ২২৫ কোটি এবং ৩০২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তি বলে দাবি করেছেন রেল কর্তারা। পুরনো লাইন নবিকরণ খাতে বরাদ্দ গত বছরের ৩৬১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩৭৮ কোটি হয়েছে। লেভেল ক্রসিং, গেট রক্ষণাবেক্ষণ-সহ বিভিন্ন কাজের জন্য বরাদ্দ ১৮ কোটি থেকে বেড়ে ৩০ কোটি টাকা হয়েছে।

রেল কর্তাদের কথায়, বিভিন্ন রোড ওভার ব্রিজ এবং আন্ডার পাস নির্মাণ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ৩৯০ কোটি টাকা হয়েছে। অন্যান্য সেতু নির্মাণ খাতে ৫০ কোটি টাকা এবং সিগন্যালিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণে ১৪৫.৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য খাতেও ১৭৩.৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি।

লেভেল ক্রসিং, ট্র্যাক নবীকরণ, ওভার ব্রিজ নির্মাণ এবং যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য খাতের সব প্রকল্প এ রাজ্যে না হলেও, সামগ্রিক ভাবে ওই সব খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পাওয়ায় তার সুফল এ রাজ্যও পাবে বলে মনে করছেন রেল কর্তারা। বাঁকুড়া থেকে মশাগ্রাম পর্যন্ত ১১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের বিদ্যুতিকরণের জন্য ৩০.৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলেও রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন