শুধুমাত্র বাড়তি সেনা-আধাসেনা মোতায়েন করে পাথর ছোড়া যুবকদের খেদিয়ে দিলেই কাশ্মীরকে শান্ত করা যাবে না বলে এক রিপোর্টে জানাল কেন্দ্রেরই প্রতিনিধি দল। উপত্যকার জন্য সামগ্রিক উন্নয়নের পরিকল্পনা ও পোক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থার যৌথ নীতি নিয়েই ভূস্বর্গকে শান্ত করা সম্ভব বলে মনে করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিশেষ প্রতিনিধিরা। তাঁদের গত সপ্তাহে উপত্যকার সব জেলা ঘুরে এসে রিপোর্ট দিতে বলেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেই রিপোর্ট পেয়েই কাশ্মীরের চালু উন্নয়ন প্রকল্পগুলির অগ্রগতি নিয়ে ২৭ এপ্রিল বৈঠক ডেকেছেন রাজনাথ। তাতে সামিল হবে কাশ্মীরের উন্নয়ন প্রকল্পে যুক্ত দফতরগুলি। মন্ত্রক সূত্রের খবর, এখন থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি উন্নয়নের পর্যালোচনাও নিয়ম করে করবে নর্থ ব্লক।
গত সপ্তাহে মন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের এক কর্তা এবং একটি কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রধান কাশ্মীর উপত্যকা সফরে গিয়েছিলেন। তাঁরা এক দিকে রাজ্য প্রশাসন, সেনা, আধাসেনার কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। অন্য দিকে যোগাযোগ করেছেন বিক্ষোভকারীদের একাংশের সঙ্গে। দূতের মাধ্যমে তাঁদের কথা হয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী কয়েক জন নেতার সঙ্গেও। সফর সেরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট পেশ করেছেন ওই দুই কর্তা।
আরও পড়ুন: মানুষের আস্থা ফেরান, নির্দেশ মেহবুবার
তাতে বলা হয়েছে, যে সমস্ত পথভ্রষ্ট যুবক পাথর ছুড়ছে তাদের সঙ্গে জঙ্গিদের গুলিয়ে ফেলা উচিত হবে না। পাথর ছোড়া বিক্ষোভের পিছনে শত্রু দেশের উস্কানি থাকলেও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি অসন্তোষও যে বড় কারণ, তা মেনে নিয়েছে ওই অনুসন্ধানকারী দল। কারণ, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ঘরোয়া ভাবে কথা বলার সময়ে তাঁরা বারে বারে উন্নয়ন ও স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়গুলিই তুলেছেন। উপত্যকার খারাপ রাস্তাঘাটের কথাও রিপোর্টে রয়েছে।
তবে মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা কাশ্মীরে বিক্ষোভ দমনে এখনও ছররার ব্যবহারই একমাত্র পথ বলে মনে করেছেন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রাণহানির আশঙ্কায় একে-৪৭-এর মতো বন্দুক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এক সময় প্লাস্টিক বুলেটের ব্যবহার বাড়ানো হবে ঠিক করেও তা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে প্রাণহানির আশঙ্কায়। এই অবস্থায় বিক্ষোভকারীদের হটাতে প্রথমে ‘ওলিওরেসিন’ গ্যাস বা গ্রেনেড ছোড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ছররাকেই বিক্ষোভকারীরা এখনও ভয় পাচ্ছে। ফলে কাশ্মীরে তা বহাল রাখার পক্ষেই মত দিয়েছে তারা। তবে একান্ত প্রয়োজন না হলে ছররা ছোড়া উচিত নয় বলে জানিয়েছেন তাঁরা।