বিক্ষোভ। শ্রীনগরে। ছবি: পিটিআই।
উপ-নির্বাচনে ভোটের হার নেমে এসেছিল ৭ শতাংশে। আর গত কাল যে ৭০০টি বুথে পুনরায় ভোটের আদেশ দেওয়া হয়েছিল তাতে ভোট পড়েছে মেরেকেটে ২ শতাংশ। কাশ্মীরে উপর্যুপরি ভোটের এই ছবি দেখে উদ্বিগ্ন নরেন্দ্র মোদী সরকার। চিন্তায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও।
কারণ একটাই। গোটা দেশের ভোটের শতকরা হার কমল কি বাড়ল তা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয় কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্যটি যে হেতু কাশ্মীর, তাই এখানে ভোটের হার তলানিতে নামার অর্থ হল, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত-বিরোধী প্রচার চালাতে পাকিস্তানের বাড়তি সুবিধা করে দেওয়া। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, ভোটের হার তলানিতে নামার অর্থ রাজ্যে মেহবুবা মুফতি সরকারের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়েছেন। আবার এই নয় যে মানুষ বিরোধী ন্যাশনাল কনফারেন্সকে বিকল্প হিসাবে গ্রহণ করেছেন। ভোটের এই স্বল্প হারই বুঝিয়ে দিচ্ছে, মেহবুবার মতো ওমর-ফারুকের দলও কাশ্মীরের মানুষের আস্থা হারিয়েছেন। স্বভাবতই রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে উপত্যকায়।
প্রশ্ন হল এই শূন্যস্থান ভরাট করে কি উঠে আসছেন হুরিয়তরা? তাদের ডাকা ধর্মঘটের কারণেই কি সাধারণ মানুষ ভোট বয়কট করছেন? নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, হুরিয়ত শুরু থেকেই ভোট বয়কটের ডাক দিত। মানুষ তা উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে ভোট দিতেন। সুতরাং হুরিয়ত নেতৃত্বের বয়কটের ডাককে গুরুত্ব দিতে চাইছে না কেন্দ্র। উল্টে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মনে করেছে, রাজনৈতিক শূন্যতার সুযোগ নিয়ে উপত্যকায় নতুন করে মাথা চাড়া দিয়েছেন জঙ্গিরা। যাদের আতঙ্কে ভোট দিতে ভয় পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ভোটের হার নেমে আসার এটিও অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন অনেকে।
শুধু তাই নয় রাস্তায় নেমেছে কাশ্মীরের যুব সম্প্রদায়ের একাংশ। যাঁরা গোটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার উপর আস্থা হারিয়ে, সরকার বিরোধিতায় সক্রিয় হচ্ছেন। ওই যুবকদের কী ভাবে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা যায়, সেটিই বড় চ্যালেঞ্জ সরকারের কাছে। আবার উপত্যকার জন্য নরেন্দ্র মোদীর আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা, একাধিক বার কাশ্মীর সফর সত্ত্বেও মানুষের মন জয় করতে তিনি যে ব্যর্থ, তা দেরিতে হলেও বুঝছে কেন্দ্র। কাশ্মীরের মন জয়ের রাস্তা খুঁজতেই এখন ব্যস্ত রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহল।