ইন্টারনেট বিশ্বে নজরদারি নিয়ে সুর নরম কেন্দ্রের

তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্র সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে অভিযোগ তুলেছিলেন, ফেসবুক-টুইটারের মতো নেট-দুনিয়ায় নাগরিকদের গতিবিধির উপরে নজরদারির জন্য আধার কর্তৃপক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং এজেন্সি তৈরি করছেন। তা সংবিধানের ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারে হস্তক্ষেপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৪৩
Share:

সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি নিয়ে সুর নরম কেন্দ্রের।

ফেসবুক-টুইটারে রাষ্ট্রের নজরদারি নিয়ে মামলার মুখে নরম মনোভাব দেখালেন আধার কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্র সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে অভিযোগ তুলেছিলেন, ফেসবুক-টুইটারের মতো নেট-দুনিয়ায় নাগরিকদের গতিবিধির উপরে নজরদারির জন্য আধার কর্তৃপক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং এজেন্সি তৈরি করছেন। তা সংবিধানের ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারে হস্তক্ষেপ।

আজ অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল সুপ্রিম কোর্টকে আশ্বাস দিলেন, মামলাকারী মহুয়া দেবীর তরফ থেকে সুপারিশ গ্রহণ করতে সরকার রাজি। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে বেণুগোপালকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের নির্দেশেও বলা হয়েছে, মামলাকারীর পরামর্শ খুব সম্ভবত সরকার মেনে নেবে। আগামী সপ্তাহে ফের এই মামলার শুনানি হবে। মহুয়া অবশ্য বলেন, ‘‘আমি চাই, এই পরিকল্পনাটা পুরোপুরি বাতিল হোক।’’

Advertisement

গত সপ্তাহে মামলার প্রথম শুনানির দিনেই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ আধার কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং এজেন্সি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। বিচারপতিরা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, আধার মামলার সময় নেট-দুনিয়ায় নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তখন আধার কর্তৃপক্ষই জানিয়েছিলেন, সরকার আধার ব্যবহারকারীদের নেট দুনিয়ায় কাজকর্মে কোনও নজরদারি করতে চায় না।

আজ শুনানির শুরুতে মহুয়া মৈত্রর আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘মাত্র ১৫ মিনিট আগে সরকারের তরফে আমাকে একটি সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। তাতে আধার কর্তৃপক্ষের মূল প্রস্তাবে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। একমাত্র বদল হল, ন্যূনতম এক লক্ষ লোকের উপরে নজরদারি চলবে। ন্যূনতম, সর্বোচ্চ নয়!’’

মহুয়ার প্রশ্ন, ন্যূনতম এক লক্ষের অর্থ কী? এক লক্ষ দূরের কথা। এক জনের উপরেও কেন নজরদারি চলবে? তা ছাড়া এখন সংশোধনী এনে কী হবে? সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং এজেন্সি সংক্রান্ত দরপত্রের সময়সীমাও তো শেষ হয়ে গিয়েছে।

এর আগে কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক সোশ্যাল মিডিয়া হাব তৈরির প্রকল্প নিয়েছিল। তারও উদ্দেশ্য ছিল, নেট-দুনিয়ায় নজরদারি চালানো। সে ক্ষেত্রেও মহুয়া মামলা করার পরে কেন্দ্র পিছিয়ে আসে। সে সময়ও প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মন্তব্য করেছিল, ‘‘যদি সব টুইট, হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা দেখা হয়, তা হলে আমরা নজরদার রাষ্ট্র তৈরির দিকেই এগোচ্ছি!’

এই মন্তব্যের পরেই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সরকার নিজে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া হাব তৈরির বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে। কিন্তু একই সময়ে আধার-কর্তৃপক্ষ মিডিয়া মনিটরিং হাব ও সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং হাব তৈরির প্রস্তাব চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement