সঙ্ঘের চাপে ক্ষোভের উৎস খুঁজছে বিজেপি

বিজয়া দশমীর বার্ষিক বক্তৃতায় সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত কিছু ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা তো করেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে আর্থিক প্রশ্নে সরকারের কঠোর সমালোচনাও করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫৬
Share:

মোহন ভাগবত। পিটিআইয়ের ফাইল চিত্র।

দেশের নিম্নমুখী অর্থনীতি নিয়ে মোহন ভাগবতের চাপের ঠেলায় এখন ফের দৌড়তে হচ্ছে বিজেপিকে।

Advertisement

বিজয়া দশমীর বার্ষিক বক্তৃতায় সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত কিছু ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা তো করেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে আর্থিক প্রশ্নে সরকারের কঠোর সমালোচনাও করেছেন। চলতি সপ্তাহে আর্থিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আলোচনায় বসছেন ভাগবত। আরএসএস প্রধানের মুখে সরাসরি এমন কথা শুনে এ বারে বিজেপি নেতৃত্ব নতুন করে রাজ্যওয়াড়ি পর্যালোচনা শুরু করছেন। কৃষি, শ্রমিক, অসংগঠিত ক্ষেত্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে কোথায় কী ধরনের অসন্তোষ রয়ে গিয়েছে, সেগুলি কী ভাবে দূর করা যায়, তা শুনে রিপোর্ট তৈরি হবে। সেটি পাঠানো হবে নরেন্দ্র মোদীর কাছে।

অমিত শাহের টিমের এক সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘মোহন ভাগবত যা বলেছেন, তা অসত্য নয়। ভারতের মতো এত বড় দেশের এত দিনের ভঙ্গুর অর্থনীতির মোড় ঘোরাতে এক বিরাট আয়োজন প্রয়োজন। বিশাল এই কর্মযজ্ঞে সব ক্ষেত্রেই কিছু না কিছু অসন্তোষ থাকবে।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, দলের নেতৃত্ব এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। তবে সরসঙ্ঘচালক যখন এই বিষয়ে সোচ্চার হচ্ছেন, তখন নতুন করে গোটা বিষয়টি পর্যালোচনা করে রিপোর্ট তৈরি হবে। বিজেপির মতে, নোট বাতিল আর জিএসটি চালুর পরে এখন প্রাথমিক ধাক্কা এসেছে। তবে এই অবস্থা দ্রুত কেটে যাবে। খোদ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিরও দাবি, অর্থনীতি সঠিক পথেই রয়েছে। অচিরেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।

Advertisement

সরসঙ্ঘচালকের চাপে বিজেপিকে নতুন করে এ কাজে নামতে হচ্ছে, কারণ সঙ্ঘের অনেক সংগঠন প্রকাশ্যে মোদী-বিরোধী আন্দোলনে নামছে। স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ, লঘু উদ্যোগ ভারতী, ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের মতো আরএসএসের বিভিন্ন সংগঠন লাগাতার মোদী সরকারের আর্থিক নীতির বিরোধিতা করছে। আর তাতে সুবিধা হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলেরই। কারণ, রাহুল গাঁধীরা বেকারি, কৃষকদের দুরবস্থা, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে অবজ্ঞা নিয়ে মোদীকে তোপ দেগে আসছেন।

যদিও বিজেপির একাংশের মত, বিরোধীদের আক্রমণের পাশাপাশি ‘ঘরের লোক’ সঙ্ঘই যদি বিরোধিতা করে, তা হলে আখেরে বিরোধীদের ধার অনেকটা কমে যায়। তবে কেউ কেউ মনে করেন, সঙ্ঘের প্রকাশ্য সমালোচনায় হিতে বিপরীতও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিরোধীদের যুক্তিগুলি স্বীকৃতি পেয়ে যায়। দু’বছরের মাথায় লোকসভার ভোট। তার আগে চারদিক থেকে অসন্তোষ বাড়লে ভোটেও তার খেসারত দিতে হবে। সঙ্ঘের মতে, ভোট যাঁরা দেবেন, তাঁরাই যদি অসন্তুষ্ট থাকেন, তা হলে বিজেপিরই বা কী লাভ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন