বস্ত্রশিল্পের স্বার্থে তুলো আমদানিতে শুল্কছাড়ের মেয়াদ বৃদ্ধি করল কেন্দ্র। —ফাইল চিত্র।
তুলো আমদানিতে আরও তিন মাস শুল্কছাড়ের সিদ্ধান্ত নিল ভারত। প্রাথমিক ভাবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তুলো আমদানিতে শুল্ক না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নয়াদিল্লি। এ বার ওই ছাড়ের মেয়াদ আরও তিন মাস বৃদ্ধি করে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিবৃতি প্রকাশ করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, দেশীয় বস্ত্র শিল্পের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঘটনাচক্রে, ভারত যে দেশগুলি থেকে তুলো আমদানি করে, তার মধ্যে অন্যতম আমেরিকা। সে ক্ষেত্রে উদ্ভূত কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সমীকরণে এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
বুধবার থেকে ভারতের উপর চড়া হারে আমদানি শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথমে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক চাপিয়েছিলেন তিনি। বুধবার থেকে তা আরও বৃদ্ধি করে ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে। আমেরিকার নতুন শুল্কনীতির প্রভাব দেশীয় বস্ত্রশিল্পেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, বাংলাদেশ বা ভিয়েতনামের মতো দেশগুলির ক্ষেত্রে মার্কিন শুল্ক অনেকটাই কম। সে ক্ষেত্রে আমেরিকার আমদানিকারকেরা ওই দেশগুলির তৈরি পণ্যের দিকে ঝুঁকতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।
এই আবহে দেশীয় বস্ত্র শিল্পের জন্য তুলোর জোগান আরও বৃদ্ধি করতে সাময়িক ভাবে তুলোর উপর শুল্কছাড়ের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, রফতানিকারকদের আরও বেশি সাহায্য করার জন্য তুলোতে আমদানি শুল্কতে ছাড়ের মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভারত মূলত অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, ব্রাজ়িল এবং মিশর থেকে তুলো আমদানি করে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুসারে, গত অর্থবর্ষে ভারতের তুলো আমদানি দ্বিগুণের চেয়েও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে আমেরিকা থেকেই আমদানি হয়েছে ২৩ কোটি ডলারের তুলো। যদিও অস্ট্রেলিয়া থেকে আরও বেশি (২৫ কোটি ডলারের) তুলো আমদানি করা হয়েছে। তবে তুলো আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমেরিকার সঙ্গে বর্তমান কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েনও অন্যতম কারণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্প বার বার অভিযোগ তুলেছেন ভারত চড়া হারে আমদানি শুল্ক নেয়। এ আবহে নয়াদিল্লির পদক্ষেপ দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কে কোনও প্রভাব ফেলে কি না, সে দিকে নজর থাকবে।