উর্জিত পটেল
পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে নিজে থেকে না সরলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর পদ থেকে লোকসভা ভোটের আগে উর্জিত পটেলকে সরানো কঠিন। তেমনটাই মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় ও অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা।
কারণ স্পষ্ট। উর্জিতকে সরালে অর্থনীতিতে ভুল বার্তা যাবে। শেয়ার বাজারে ধস নামতে পারে। ডলারের তুলনায় টাকার দর আরও পড়তে পারে। বিদেশি লগ্নিকারীদের কাছেও ভুল বার্তা যাবে।
১৯ নভেম্বর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বোর্ডের বৈঠক। উর্জিতের উপর চাপ তৈরি করে, তাঁকে অর্থ মন্ত্রকের অবস্থান বোঝাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না অর্থ মন্ত্রক। তা সত্ত্বেও যদি ওই বৈঠকে উর্জিত অর্থ মন্ত্রকের দাবিদাওয়া না মানেন এবং নিজে থেকে সরে না যান, সে ক্ষেত্রে মোদী সরকার কী করবে, তা বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। এক কথায়, উর্জিতকে নিয়ে মোদী সরকার উভয় সঙ্কটে পড়েছে।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আগামী ১৯ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রকের দুই সচিব মোদী সরকারের অবস্থান নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বোর্ডে সরকারের দাবি-দাওয়া নিয়ে ‘প্রেজেন্টেশন’ দেবেন। বোঝানো হবে, সরকারের ওই সব দাবির ‘উপকারিতা’ কী? বেসরকারি ভাবে দূত পাঠিয়েও উর্জিতকে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আইনের ৭ নম্বর ধারাকে কাজে লাগিয়ে সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দিতে পারে। সরকার ইতিমধ্যেই আলোচনায়, চিঠিপত্রে সেই ধারার উল্লেখ করেছে। আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন সতর্ক করেছেন, ‘‘এই ধারা কাজে লাগালে সরকারের সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সম্পর্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।’’
তবে অর্থ মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘আমরা আশাবাদী, ১৯ তারিখের বৈঠকে বিবদমান বিষয়গুলি নিয়ে একটা সমাধানে পৌঁছনো যাবে। বোর্ডের আগের দিনের বৈঠকেই অনেকটা সমাধান হয়েছিল। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’’
উর্জিতের উপর প্রবল চাপ তৈরি করা হলে তিনি নিজেও সরে যেতে পারেন। তাতেও ভুল বার্তা যাবে বলে অর্থনীতিবিদদের মত। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসি-র অর্থনীতিবিদ এন আর ভানুমূর্তির মতে, ‘‘গভর্নরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হলেও অর্থনীতিতে ধাক্কা লাগতে পারে।’’