ব্যারিকেডের উপরে হাতে ধরে পেল্লায় ‘চেক’। ২৪ লক্ষ টাকার। প্রাপক সোনালি জেটলি। নীচে সই মেহুল চোক্সীর। চেকের উপরে লেখা ‘ফেকু ব্যাঙ্ক’।
নকল চেক বানিয়ে অরুণ জেটলির বাড়ির দিকে যেতেই দিল্লি পুলিশ আর র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স শুরু করল লাঠিপেটা। পাঁজাকোলা করে তুলল বাসে। তবু স্লোগান থামাননি যুব কংগ্রেসের সদস্যরা। সমানে চেঁচিয়ে গেলেন, ‘‘চৌকিদার চোর হ্যায়, অরুণ জেটলি ইস্তফা দো।’’
রাহুল গাঁধী গত কালই অভিযোগ করেছিলেন মেহুল চোক্সীর টাকা পেয়েছেন অরুণ জেটলির মেয়ে। জেটলির ইস্তফার দাবিও তুলেছেন কালই। আসল নিশানা নরেন্দ্র মোদী। যাঁকে আড়াল করতে আজকাল প্রায়ই রাহুলকে বিঁধে ব্লগ লেখেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টা পরেও চোক্সীর চেক নিয়ে টুঁ শব্দ করেননি জেটলি। বিজেপির অন্য নেতারাও এ নিয়ে বেশি জলঘোলা করতে চাইছেন না। ঘরোয়া মহলে বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, ‘‘আগেও এই অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। ধোপে টেকেনি। রাহুল সব বিষয়েই দুর্নীতির মোড়ক দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণে ব্যস্ত। মানুষই এর জবাব দেবেন। কিন্তু থামতে নারাজ রাহুল। আজ যুব কংগ্রেসকে নামিয়ে দিয়েছেন রাজপথে। জেটলির বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানোর আগেই পুলিশ তাদের আটক করে। বিকেল গড়াতে স্তব্ধ হয় রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রের যাতায়াত। জেটলির বাড়ির পথে সব রাস্তাই বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ।
কংগ্রেসের নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, ‘‘এ কেমন দেশ? জেটলির ইস্তফা চাওয়ায় যুবকদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।’’ রণদীপের বক্তব্য, ওই যুবকেরা জেটলির ইস্তফা চাইছেন, কারণ নীরব মোদী ও মেহুলের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী দফতর আর অর্থ মন্ত্রকের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে ২০১৫ সালে। এর দু’বছর পরে কী কারণে জেটলির মেয়ে সোনালি ও জামাই জয়েশ বক্সীর আইনি সংস্থা চোক্সীর কাছে থেকে ২৪ লক্ষ টাকা পায়! নীরব-মেহুল দেশ ছেড়ে পালানো ও তা নিয়ে এফআইআর হওয়ার অনেক পরে সেই টাকা ফেরত দিয়েছে সংস্থাটি। যুক্তি ছিল, মেহুলদের হয়ে আইনি সাহায্য জোগানোর কোনও কাজ তারা করেনি!’’ কংগ্রেসের প্রশ্ন, ‘‘সব জেনেও অর্থমন্ত্রী যদি তাঁর পরিবারকে চুরি করে পালিয়েছে এমন ব্যক্তির থেকে টাকা নিতে বলেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হবে না কেন? বিরোধী দলের কারও বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠলে তো এত ক্ষণে সব তদন্তকারী সংস্থা নেমে পড়ত!’’