ধর্ষণে ধৃত দিল্লির পুলিশ, চাপ বাড়াচ্ছে আপ

ফের ধর্ষণ রাজধানীতে। এ বার অভিযোগ খোদ দিল্লি পুলিশের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার অভিযুক্ত। চাকরি থেকে বরখাস্তও করা হয়েছে তাঁকে। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়ার পরেই আজ সেই কাণ্ডের জেরে দিল্লির পুলিশ কমিশনার বি এস বাস্‌সির ইস্তফা চেয়ে সরব হয়েছে আম আদমি শিবির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৫ ০০:০৩
Share:

ফের ধর্ষণ রাজধানীতে। এ বার অভিযোগ খোদ দিল্লি পুলিশের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার অভিযুক্ত। চাকরি থেকে বরখাস্তও করা হয়েছে তাঁকে। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়ার পরেই আজ সেই কাণ্ডের জেরে দিল্লির পুলিশ কমিশনার বি এস বাস্‌সির ইস্তফা চেয়ে সরব হয়েছে আম আদমি শিবির।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। অভিযোগ, পশ্চিম দিল্লির পঞ্জাবিবাগ থানার এএসআই জাভির সিংহ সে দিন তাঁর এক বন্ধুর বাড়িতে মদ্যপান করতে গিয়েছিলেন। সেখানে মদের নেশায় বন্ধুর বাড়ির বছর তেইশের পরিচারিকাকে ধর্ষণ করেন ওই পুলিশকর্মী। বাধা দিতে গেলে নিজের সার্ভিস রিভলভার উঁচিয়ে জাভির তাঁকে খুনের হুমকি দেন বলেও জানিয়েছেন নির্যাতিতা। ঘটনাটির সিসিটিভি ফুটেজ থাকায় গত কালই ওই পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করেছে দিল্লি পুলিশ। আজ তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ কমিশনার বাস্‌সি আজ দাবি করেছেন, ‘‘অভিযুক্তর বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট পেশ করা হবে। ওই ব্যক্তি কোনও ভাবেই ছাড় পাবে না।’’ গত কাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই নির্যাতিতা। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণও মিলেছে। ধৃত এএসআইকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ পুরো বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গের কাছে। নজীব আবার রিপোর্ট তলব করেছেন কেজরীবালের থেকে। নিজেদের মুখ বাঁচাতে দিল্লি পুলিশ কমিশনার দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করলেও, আসরে নেমেছে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের দল। বাস্‌সির পদত্যাগ ছাড়াও আপের দাবি— দিল্লি নয়, অন্য সব রাজ্যের মতো দিল্লির নির্বাচিত সরকারের হাতেই দিল্লি পুলিশের কর্তৃত্ব তুলে দেওয়া হোক। আপ নেতৃত্বের বক্তব্য, তা না হলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

Advertisement

এই দাবি অবশ্য এ বারই প্রথম নয়। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দিল্লি পুলিশের দায়িত্ব নির্বাচিত সরকারের হাতে রাখা নিয়ে সরব আপ। দলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘‘আমাদের সরকার মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু যাদের মাধ্যমে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে, সেই দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রের অধীনে। তারা দিল্লি সরকারের নির্দেশ মানতে বাধ্য নয়। ফলে সব স্তরে সমন্বয়হীনতা তৈরি হচ্ছে।’’

রাজধানীর অন্দরে অবশ্য এর একটা অন্য ব্যাখ্যাও মিলছে। একাংশের দাবি, গোটা বিষয়টি থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই তড়িঘড়ি আসরে নেমেছে আপ। কেন না, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দিল্লি পুলিশ যে ভাবে আপ নেতাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় থেকেছে, তাতে অস্বস্তিতে দল। জালিয়াতির অভিযোগে ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন দিল্লির আইনমন্ত্রী ও আপের এক বিধায়ক। বৃহস্পতিবারের ধর্ষণের দায়ে এক পুলিশকর্মী গ্রেফতার হতেই বল আপের কোর্টে। বিজেপি অবশ্য বিঁধতে ছাড়ছে না কেজরীবালের দলকে। এক নেতার অভিযোগ, ‘‘দিল্লির সরকার চাইলেই দায় এড়াতে পারে না। নির্ভয়া কাণ্ডে কংগ্রেসশাসিত দিল্লি সরকারের কাছেই জবাবদিহি চেয়েছিল আপ। এখন সুযোগ বুঝে কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন