লিঙ্গ সাম্যের দিকে আর এক ধাপ এগোল এ’দেশ। প্রথম রূপান্তরকামী হিসেবে সাব ইন্সপেক্টর পদে যোগ দিলেন চেন্নাইয়ের কে পৃথিকা যশিনি। তবে পুলিশ হয়ে ওঠার পথটা যশিনির কাছে খুব একটা মসৃণ ছিল না। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর নিজের অধিকারটা আদায় করে নিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার এক ঐতিহাসিক রায়ে মাদ্রাজ হাইকোর্ট তামিলনাড়ু ইউনিফর্মড সার্ভিস রিক্রুটমেন্ট বোর্ড (টিএনইউএসআরবি)-কে জানায়, সাব ইন্সপেক্টর পদে যোগ দেওয়ার সব যোগ্যতাই রয়েছে যশিনির। অতএব অবিলম্বে যেন তাঁকে নিযুক্ত করা হয়।
একই সঙ্গে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, এ বার থেকে চাকরিতে নিয়োগের সময় রূপান্তরকামীদের জন্য ‘থার্ড ক্যাটাগরি’-র উল্লেখ করতে হবে।
প্রাথমিক ভাবে, সাব ইন্সপেক্টর পদে যশিনির আবেদন খারিজ করে দেয় টিএনইউএসআরবি। কিন্তু হাল ছাড়তে রাজি হননি তিনি। আবেদন করেন হাইকোর্টে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ভিন্ন লিঙ্গের মানুষরা সরকারি শিক্ষা এবং কর্ম ক্ষেত্রে সবরকম সংরক্ষণের আওতায় পড়েন। যশিনি হাইকোর্টে আবেদনের সময়ে শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশেরও উল্লেখ করেন।
সেপ্টেম্বরেই আদালতের নির্দেশে মৌখিক পরীক্ষায় বসার অনুমতি পান যশিনি। উত্তীর্ণও হন। সেখানে তাঁকে পুরুষ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এখন তিনি নারী।
আর তার পরেই আটকে দেওয়া হয় তাঁর আবেদন। রায় দেওয়ার সময় হাইকোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেঞ্চ জানিয়েছে সমাজে রূপান্তরকামীদের কী ভয়ানক বৈষম্যের শিকার হতে হয় সেটা বুঝতেই আমরা অনেক দিন কাটিয়ে দিয়েছে।
বস্তুত নিজের তথাকথিত ভিন্ন লিঙ্গ পরিচিতির জন্য সামাজিক ভাবে বহু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে যশিনিকে। বাড়ি থেকেও তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি।
মাদ্রাজ হাইকোর্ট জানিয়েছে সংবিধান মেনেই একই রকম সুবিধা পাওয়ার অধিকার আছে যশিনির মতো সমস্ত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরই।
আদালতের এই সিদ্ধান্ত ভিন্ন লিঙ্গের মানুষদের সমাজে সমানুধিকার প্রতিষ্ঠা করতে অনেকটাই সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন যশিনি।