দেনপাসার-এ সেল থেকে বার করা হচ্ছে ছোটা রাজনকে। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে। সোমবার। ছবি: এএফপি।
কসাবের কয়েদখানাতেই কি জায়গা হতে চলেছে ছোটা রাজনের? অন্তত মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলের প্রস্তুতি তো সে কথাই বলছে।
সব কিছু ঠিক থাকলে আগামিকাল ভারতে এসে পৌঁছনোর কথা ইন্দোনেশিয়ায় ধৃত মাফিয়া ডন ছোটা রাজনের। হস্তান্তর সম্পর্কিত জটিলতা কাটাতে ইতিমধ্যেই ইন্দোনেশিয়া সরকারের কাছে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন ভারতীয় প্রতিনিধিরা। সূত্রের খবর, ইন্দোনেশিয়ার সবুজ সঙ্কেত পেলেই আগামিকাল ছোটা রাজনকে প্রথমে দিল্লি নিয়ে আসবে ভারতীয় তদন্তকারীদের দলটি। তারপর সেখান থেকে তাঁকে মুম্বই নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আর সে ক্ষেত্রে মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলে জায়গা হতে পারে রাজনের। সূত্রের খবর, আর্থার রোডে যে সেলে মুম্বই হামলায় ধৃত জঙ্গি আজমল কসাব ছিল সেটাই সবচেয়ে সুরক্ষিত। আর তাই নতুন করে সাফ করা শুরু হয়েছে ওই সেল। তবে নিরাপত্তার কারণে রাজনের যাত্রাপথ অদলবদল হতে পারে বলেও আজ ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে কেন্দ্র।
সরকারি সূত্রে খবর, যেহেতু রাজনের বিরুদ্ধে সব চেয়ে বেশি অভিযোগ মহারাষ্ট্রে, তাই তাঁকে মুম্বইয়ে রাখারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আর সেই কারণেই আর্থার রোড জেলকে বেছে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।
রাজনের উপরে দাউদ ইব্রাহিমের অনুচরদের হামলা নিয়ে সব সময়েই আশঙ্কায় রয়েছে দিল্লি। জেলের মধ্যে প্রতিপক্ষের উপরে আঘাত হানা মুম্বই অপরাধ জগতের কাছে নতুন কিছু নয়। আজই মেঙ্গালুরুর জেলে বন্দিদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে দাউদ গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে পরিচিত মাদুর ইউসুফ ও গণেশ শেট্টি। আর্থার রোড জেলেও দাউদের কিছু শাগরেদ রয়েছে। তারা সুযোগ পেলেই রাজনের উপরে হামলা চালাতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। তাই কসাবের সেলে রাখার পাশাপাশি রাজনকে নিরাপত্তা দিতে ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি) মোতায়েনের কথা ভাবছে কেন্দ্র। কসাবকেও এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর কম্যান্ডোরা পাহারা দিতেন। প্রয়োজনে কসাবের মতোই জেলের মধ্যে বিশেষ আদালতে রাজনের বিচারের আর্জি জানাতে পারে মহারাষ্ট্র সরকার।
এ দিকে রাজনকে ভারতে নিয়ে আসার তোড়জোড় যখন চরমে, তখন আজ ইসলামাবাদ ও করাচিতে দাউদ ইব্রাহিমের দু’টি ঠিকানায় নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাক প্রশাসন। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, রাজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দাউদের উপরে হামলা হতে পারে বলে মনে করছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। তাই আজ ভোর চারটেয় ওই দু’টি বাড়ির সামনে পাক সেনার বিশেষ কম্যান্ডো বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে লস্কর প্রধান হাফিজ সইদ ও মুম্বই হামলার চক্রী জাকিউর রহমান লকভির বাড়ির সামনেও।