দাদু-দিদার কাছে আর ফিরতে চায় না ওরা

যে দাদু-দিদা ছিল ভরসার জায়গা, সেই তাঁরাই বাপ-মা মরা দুই ভাইকে পাচারকারীর হাতে তুলে দিয়েছিল! ৪ বছর পরে সেই দুই ভাই আজ ভোরে রাঁচী স্টেশনে নেমে অ্যান্টি-হিউম্যান ট্রাফিকিং ইনস্পেক্টর আরাধনা সিংহের হাত ধরে কেঁদে উঠল, তারা ফিরতে চায় না।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

রাঁচী শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩২
Share:

যে দাদু-দিদা ছিল ভরসার জায়গা, সেই তাঁরাই বাপ-মা মরা দুই ভাইকে পাচারকারীর হাতে তুলে দিয়েছিল! ৪ বছর পরে সেই দুই ভাই আজ ভোরে রাঁচী স্টেশনে নেমে অ্যান্টি-হিউম্যান ট্রাফিকিং ইনস্পেক্টর আরাধনা সিংহের হাত ধরে কেঁদে উঠল, তারা ফিরতে চায় না।

Advertisement

সাহেবগঞ্জের বছর দশেকের সাবির-আলমই (নাম পরিবর্তিত) শুধু নয়, দিল্লি থেকে স্বর্ণজয়ন্তী এক্সপ্রেসে ২৪ জন বালক-বালিকা, কিশোর-কিশোরী আজ রাঁচীতে পৌঁছল। দিল্লিতে পাচার হওয়া এই বাচ্চারা ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের। রাঁচী ফিরে তাদের চোখে-মুখে আনন্দ। ব্যতিক্রম সাবির আর আলম। তাদের চোখে ঘরে ফেরার ‘আতঙ্ক’। আবারও পাচার হওয়ার ‘ভয়’। প্রশ্ন তাদের একটাই, ফের ওই বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে না তো? ঝাড়খণ্ড শিশুকল্যাণ দফতরের হোস্টেল ‘প্রেমাশ্রয়ে’ ঠাঁই হয়েছে ওই দুই ভাইয়ের। গুছিয়ে কথাও বলতে পারছিল না তারা। জানালো, তাদের শুধু মনে আছে, এক দুর্ঘটনায় মা, বাবা দু’জনেই মারা যান। তার পর দু’বেলা খাওয়া জুটত না। আশ্রয় পেয়েছিল দাদু-দিদার কাছে। কিছু দিনের মধ্যে সেই দাদু-দিদাই সাহেবগঞ্জ স্টেশনে এক অচেনা লোকের হাতে তুলে দেয় তাদের। সেই অচেনা চাচাই তাদের দু’জনকে নয়াদিল্লি স্টেশনে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামায়। ইনস্পেক্টর আরাধনা সিংহ বলেন, ‘‘পাচারের সময় ওদের বয়স বোধহয় ছিল ছয়-সাত।’’

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির পদে নিরপেক্ষ মুখ খুঁজছেন সনিয়া

Advertisement

নয়াদিল্লি স্টেশনে ভিক্ষা করলেও সেই ভিক্ষার টাকায় তাদের অধিকার ছিল না। কখনও কখনও খাবারও জুটত না। কিন্তু স্টেশন থেকে পালানোরও উপায় ছিল না। শেষে দিল্লি পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হোমে রাখার ব্যবস্থা করে। আরাধনাদেবী জানান, দিল্লির ওই হোমের সূত্র ধরেই তাঁরা এদের সন্ধান পান।

গ্রামে তারা যখন ছিল, তখন প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। সাবির-আলম ফের স্কুলে যেতে চায়। কিন্তু বাড়ি ফিরতে চায় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন