তাৎপর্যপূর্ণই বটে! আচমকাই ২৬/১১র মুম্বই সন্ত্রাসে লস্কর-ই-তৈবা তথা পাকিস্তানের ভূমিকা আছে বলে মানল চিন। এই প্রথম।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বই শহরের নানা জায়গায় বড় মাপের সন্ত্রাস চালিয়েছিল পাক জঙ্গিরা। ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলে। নিহত হন ১৬৬ জন। কয়েকশো মানুষ জখম হন। বিশ্ব জুড়েই নিন্দার ঝড় ওঠে। আঙুল ওঠে পাকিস্তানের দিকে। পাকিস্তান থেকে সমুদ্র পথে এদেশে ঢোকা পাক সন্ত্রাসবাদীদের বাকিরা মারা পড়লেও, আজমল কাসভ ধরা পড়ে। তাকে জেরা করে মেলে নানান তথ্য। চিনও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছিল। কিন্তু এর পিছনে যে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হাত আছে তা কখনই স্বীকার করেনি চিন।
শেষ পর্যন্ত ঘটনার প্রায় আট বছর পর পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে এ ভাবে মুখ খুলল তারা। চিনের সরকারি টেলিভিশন সিসিটিভি৯ সম্প্রতি একটি তথ্যচিত্র সম্প্রচার করেছে। এই তথ্যচিত্রে বলা হয়েছে মুম্বইতে হামলা চালায় লস্কর-ই-তৈবা। লস্করকে পিছনে পাক মদতদাতাদেরও উল্লেখ করা হয়েছে এই তথ্যচিত্রে, জানাচ্ছে সংবাদ সংস্থা।
আরও পড়ুন- প্রথম মহিলা হিসাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার অনুমোদন পেলেন হিলারি
কিন্তু হঠাত্ কী এমন হল যে ‘বন্ধু’ দেশ পাকিস্তানকে অস্বস্তি এবং চাপে ফেলার মতো মতামত দিয়ে বসল চিনের সরকারি টেলিভিশন! আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্প্রতি নানা কারণে ভরতের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে চিনের। ভারতের দাবি মতো পাক সন্ত্রাসবাদী মৌলানা মাসুদ আজহারের নাম রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাসবাদী তালিকায় তুলতে দেয়নি চিন। অথচ মাসুদের সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদ রাষ্ট্রপুঞ্জের কালো তালিকাতেই আছে। এ ছাড়াও পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্টী বা এনএসজিতে ভারতকে ঢুকতে দিতে বাধা দিয়ে চলেছে চিন। এ সব নিয়ে নয়াদিল্লির অসন্তোষ চিনের কাছে অজ্ঞাত নয়। এই অবস্থায় ভারত আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটিয়ে চলেছে। এটা বেজিঙের চিন্তার কারণ। এশীয় রাজনীতির ভারসাম্যের খেলায়, এমনকী বিশ্ব রাজনীতির ভারসাম্যের খেলাতেও ভারতকে পুরোপুরি চটাতে চায় না চিন। সেই কৌশলেই কি মুম্বই হামলা নিয়ে হঠাত্ ‘বোধোদয়’? তেমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।