সন্ত্রাসবাদ দমনে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের প্রশ্নে সামান্য গলছে কিন্তু মচকাচ্ছে না চিনের প্রাচীর!
মুম্বই সন্ত্রাসের মূল মস্তিষ্ক জাকিউর রহমান লকভিকে পাক জেল থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে গত মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণাপন্ন হয়েছিল ভারত। কিন্তু চিনের আপত্তিতে ভারতের সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। গত কাল রাশিয়ার উফায় চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে জোরালো ভাবে অসন্তোষ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ সন্ত্রাস দমনে সার্বিক ভাবে ভারতের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিলেও লকভি প্রশ্নে নিজেদের অনমনীয় মনোভাবই তুলে ধরেছে বেজিং। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়াং বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত কমিটির বিভিন্ন দিকগুলি নিয়ে চিন কাজ করে। সেটা করা হয় নিখুঁত তথ্য এবং নৈর্ব্যক্তিক পর্যালোচনার মাধ্যমে।’’ কূটনৈতিক শিবিরে বক্তব্য, চুনিয়াং এই ইঙ্গিতই দিয়েছেন যে ভারত যে তথ্য প্রমাণ দিয়েছিল তা ‘নিখুঁত’ ছিল না।
ভারত অবশ্য. গোড়া থেকেই চিনের আনা এই ‘দুর্বল তথ্য দেওয়ার’ অভিযোগ উড়িয়ে এসেছে। তবে আজ চিন অনড় অবস্থান নেওয়ায় ভারত হতাশ নয়। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, ব্রিকস-এ এই প্রসঙ্গটি উত্থাপন করলেই যে চিন সর্বসমক্ষে নতি স্বীকার করে লকভি সম্পর্কে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদকে অনুরোধ করবে—এমন আশা প্রধানমন্ত্রী করেননি। চিন এত তাড়াতাড়ি নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে যাবে— বিষয়টি এমনও নয়। কিন্তু বহুদেশীয় একটি মঞ্চে প্রসঙ্গটি জোর গলায় তুলে ধরে আন্তর্জাতিক স্তরে বিষয়টিতে সিলমোহর লাগানোর কাজটি অত্যন্ত জরুরি ছিল সাউথ ব্লকের কাছে। সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে বিষয়টিকে আবার চড়া স্বরে তুলবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বৃহত্তর মঞ্চে লকভি নিয়ে চিনের উপর চাপ তৈরি করাটাই আপাতত সাউথ ব্লকের লক্ষ্য।
তবে লকভি প্রশ্নে অনড় থাকলেও সন্ত্রাসবাদ দমনে সহযোগিতার প্রশ্নে ভারতকে একই বন্ধনীতে রেখেছে বেজিং। চুনিয়াং বলেন, ‘‘ভারত এবং চিন— এই দু’টি দেশই সন্ত্রাসবাদের শিকার। সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে বেজিং।’’ অন্য দিকে ব্রিকস-এর বক্তৃতায় মোদী বলেছেন, ‘‘আমাদের উচিত ঐক্যবদ্ধ ভাবে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করা।
এ ব্যাপারে কোনও দেশ, গোষ্ঠী, আর্থিক মদতদাতাদের প্রতি পক্ষপাত রাখা অনুচিত।’’