উপলক্ষ ত্রিপাক্ষিক সার্বিক সহযোগিতা। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জে সাধারণসভার অধিবেশনের ফাঁকে ত্রিপাক্ষিক (ভারত-আমেরিকা-জাপান) বৈঠকটি হল মূলত দক্ষিণ চিনা সাগরে চিনের একাধিপত্য খর্ব করার লক্ষ্যে।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসন এবং জাপানের বিদেশমন্ত্রী তারো কোনো এ দিন নিজেদের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এ রকম ত্রিপাক্ষিক বৈঠক এই প্রথম।
বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, ডোকলাম কাণ্ডের পর নয়াদিল্লির জন্য এই ত্রিপাক্ষিক জোটকে পোক্ত করা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গত সপ্তাহে গুজরাতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গেও এ নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আজকের বৈঠকের পর বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে চিনের নাম না করেও মূল উদ্বেগের জায়গাটি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ চিনা সাগরে আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে নিজেদের আধিপত্য বাড়াচ্ছে বেজিং— এটাই মূল অভিযোগের জায়গা ভারত, আমেরিকা জাপান-সহ বেশ কিছু দেশের। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নৌ চলাচলে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা, আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা, যে কোনও সঙ্কটে শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজার ব্যাপারে তিন দেশের নেতারাই একমত হয়েছেন।’
আজকের আলোচনায় উঠে এসেছিল চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের প্রসঙ্গ। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে ওই করিডর যাওয়া নিয়ে ভারতের আপত্তির সঙ্গে সুর মিলিয়েছে টোকিও-ও। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সংযোগ সাধনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিধিবদ্ধতা মেনে চলাটা খুবই জরুরি। সেক্ষেত্রে কোনও দেশের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক সীমারেখা অখণ্ড রাখার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার।’
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদীর আমেরিকা সফরের পর চিনের সরকারি দৈনিক ‘গ্লোবাল টাইমস’-এ পাল্টা চাপ দিতে লেখা হয়, ‘চিনের দ্রুত উত্থানে ওয়াশিংটন ও দিল্লি যারপরনাই উদ্বিগ্ন। কিন্তু ভারত কখনওই অস্ট্রেলিয়া বা জাপানের মতো বন্ধু দেশ হয়ে উঠতে পারবে না আমেরিকার। ফলে আখেরে ভারতের লাভ হবে না।’ আজকের বৈঠকের পর চিন কী বলে, সে দিকে নজর রাখছে সাউথ ব্লক।