আইএনএস কার্মুক নামে এই যুদ্ধজাহাজই আন্দামানে পাঠানো হয়েছে।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে রণসজ্জা আরও বাড়াল ভারত। মিসাইল করভেট গোত্রের বড়সড় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কার্মুক-কে আন্দামানে পাঠিয়ে দিল ভারতীয় নৌসেনা। ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আঘাত হানতে সক্ষম এই যুদ্ধজাহাজ এ বার থেকে স্থায়ী ভাবেই থাকবে আন্দামানে। টহল দেবে মূল ভূখণ্ড থেকে ১২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জের চারপাশে। আন্দামান সাগরে চিনা যুদ্ধজাহাজের গতিবিধি বাড়ার পর থেকেই ওই এলাকায় দ্রুত শক্তি বাড়াতে করতে শুরু করেছে ভারতীয় নৌসেনা।
আন্দামান নিয়ে এ বছরের গোড়া থেকেই প্ররোচনা দিতে শুরু করেছে চিন। খবর প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের। এ বছরের গোড়ায় আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে চিনের একটি ম্যাপের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে দেখানো হয়। তার পর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে চিনা যুদ্ধজাহাজ লুকিয়ে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের খুব কাছে পৌঁছে যায়। রেডারে তার উপস্থিতি টের পেয়েই সতর্ক হয়ে যায় ভারতীয় নৌসেনা। চার দিকে থেকে নজরদারি জাহাজ ঘিরে ফেলে চিনা যুদ্ধজাহাজটিকে। পরে চিনা যুদ্ধজাহাজটি আন্দামান সাগর ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু নৌসেনা কর্তাদের সন্দেহ, চিনা সাবমেরিন মাঝেমধ্যেই লুকিয়ে হানা দিচ্ছে আন্দামান সাগরে।
আন্দামান-নিকোবরকে ঘিরে চিনা যুদ্ধজাহাজের গতিবিধি বেড়ে যাওয়ার পর ভারত দ্রুত বাড়াতে শুরু করে ওই দ্বীপপুঞ্জের নিরাপত্তা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, আন্দামানে বেশ কিছু সুখোই যুদ্ধবিমান ইতিমধ্যেই মোতায়েন রয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের একটি গোটা রেজিমেন্টও। গতকাল অর্থাৎ ৬ এপ্রিল সেখানে পৌঁছে গিয়েছে একটি মিসাইল করভেট। এই প্রথম আন্দামানের নৌ-ঘাঁটি মিসাইল করভেটের মতো বড় এবং শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ পেল। ১৪ জন নৌসেনা অফিসারের নেতৃত্বে ১৩০ জন জওয়ান রয়েছেন আইএনএস কার্মুক নামে এই যুদ্ধজাহাজে। এই জাহাজ হেলিকপ্টারও বহন করে। ভারী গোলাবর্ষণে সক্ষম এই যুদ্ধজাহাজ যে কোনও প্রতিপক্ষের ত্রাস। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র হানার ক্ষমতা। ভূমি-থেকে-ভূমি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে প্রতিপক্ষকে সহজেই নাস্তানাবুদ করতে পারে আইএনএস কার্মুক। আন্দামানের নৌ-ঘাঁটিতে স্থায়ী ভাবে থাকার পাশাপাশি আন্দামানের চারপাশে টহলদারিও চালাবে আইএনএস কার্মুক।
আরও পড়ুন:
রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ উড়ান, বিশ্বের সেরা চপার এখন ভারতের হাতে
আন্দামান ভারতের হাতে থাকায় ভারত মহাসাগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নজরদারি চালানো ভারতের পক্ষে সহজ তো হয়ই। চিনকেও চাপে রাখা যায়। কারণ দক্ষিণ চিন সাগর থেকে ভারত মহাসাগরে যে পথ দিয়ে ঢোকে চিনা জাহাজ, সেই মালাক্কা প্রণালীকে যে কোনও সময় স্তব্ধ করে দেওয়া সম্ভব আন্দামানের নৌ-ঘাঁটি থেকে। কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ আন্দামানকে সুরক্ষিত করতে আগেই একটি সাবমেরিন বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ সেখানে পাঠিয়েছিল ভারত। এ বার তার সঙ্গে যোগ হল মিসাইল করভেটও।