২০১০। সুষমা তখন বিরোধী নেত্রী, ললিত মোদী আইপিএল কমিশনার। নয়াদিল্লিতে একটি ম্যাচ চলাকালীন। — ফাইল চিত্র
সুষমা স্বরাজকে বিদেশমন্ত্রীর পদ থেকে অবিলম্বে বরখাস্ত করার দাবি জানালেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। একই সঙ্গে ললিত মোদীকে সমর্থন করা বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রীকে হুঁশিয়ারিও দিলেন তিনি। একা রাহুল নন, ললিত মোদী বিতর্কে বিজেপিকে বিঁধতে এককাট্টা বিরোধীরা।
কংগ্রেস থেকে বাম, রাষ্ট্রীয় জনতা দল থেকে সমাজবাদী পার্টি— সকলেই বিজেপিকে এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। অনেকে আবার প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিও দাবি করেছে। বিজেপি যদিও সুষমা স্বরাজের পাশেই দাঁড়িয়েছে। শুধু দল নয়, আরএসএস-কেও নিজের পাশে পেয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। তারই মধ্যে আবার অন্তর্ঘাতের গন্ধ পাচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। সব মিলিয়ে ললিত-কাণ্ডে বেশ বেকায়দায় বিজেপি।
তবে, সোমবার এই নিয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমার কোনও হেলদোল দেখা যায়নি। অন্যান্য দিনের মতো এ দিনও তিনি সকালবেলাতে জওহরলাল নেহরু ভবনে তাঁর অফিসে পৌঁছন। যুব কংগ্রেস যদিও সকাল থেকে তাঁর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছিল।
ক্রিকেট–কর্তা ললিত মোদীকে বিদেশে যাওয়ার ভিসা পেতে সাহায্য করেছেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী— রবিবার সকালে এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকে রাজধানীর রাজনীতি কার্যত সরগরম। টুইট করে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নেন সুষমা নিজেই। তাঁর দাবি, ‘মানবিক কারণে’ তিনি ললিতকে সাহায্য করেছিলেন। এর পরই বিরোধীরা একজোটে বিদেশমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তোলে। এ দিন সকালেও সুষমা টুইট করেন। সেখানে তিনি সংবাদ মাধ্যমের উদ্দেশে ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য করে জানতে চেয়েছেন, ‘আজ কারা ন্যায়নীতির ধ্বজা ধরেছেন?’
বিজেপি-র অন্দর থেকে এ দিন অন্তর্ঘাতের প্রশ্ন তোলা হয়েছে। দলীয় সাংসদ কীর্তি আজাদ বলেন, ‘‘আস্তিনে সাপ আছে!’’ আজাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজেপি সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হা। তিনি বলেন, ‘‘আজাদ আমার ভাইয়ের মতো। তিনি বুঝেই কথা বলেন।’’
তবে, গোটা ঘটনায় এখনও মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও এ দিন তাঁর বিবৃতি দাবি করেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রীকে গোটা ঘটনার ব্যাখ্যা করতে হবে। প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে সমাজবাদী পার্টির মুলায়ম সিংহ যাদব এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দলের লালুপ্রসাদের গলাতেও। দু’দলই গোটা ঘটনার জন্য এ দিন প্রধানমন্ত্রী মোদীকেই দায়ী করেছে। পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রীর পদ থেকে সুষমার পদত্যাগও দাবি করেছে তারা। এরই মধ্যে মঙ্গলবার মার্কিন সফরে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সেখানে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক বৈঠক রয়েছে তাঁর।
ব্রিটেন যদিও এই মুহূর্তে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সংকট তৈরি করতে নারাজ। এ দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাটা তাদের ভবিষ্যত্ কূটনীতির অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। তার কারণ যদিও ভারতের বিরাট বাজার।