লোকসভা ভোটের আগে ফের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে সরব হলেন নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
লোকসভা ভোটের আগে ফের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে সরব হলেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। জম্মুতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘‘মা ভারতী-এর যে সব সন্তান দেশভাগের সময়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন তাঁদের সাহায্য করতেই আনা হয়েছে এই বিল।’’ অন্য দিকে বিষয়টি নিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রতিবাদের সুর ক্রমশই চড়া হচ্ছে। আজ এই বিলের প্রতিবাদে পদ্মশ্রী ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মণিপুরি চিত্রপরিচালক অরিবাম শ্যাম শর্মা।
পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও পার্শী সম্প্রদায়ের মানুষ ধর্মীয় উৎপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে এসে অন্তত ৭ বছর এ দেশে থাকলে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে ওই বিলে। লোকসভায় পাশ হয়ে বিলটি এসেছে রাজ্যসভার সচিবালয়ের হাতে। কিন্তু উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-সহ নানা শিবির এই বিলের বিরোধী।
আজ জম্মুর বিজয়পুরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশভাগের সময়ে যাঁরা চলে গিয়েছিলেন তাঁদের কথা ভেবে আমরা নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের কথা ভেবেছি। ১৯৪৭ সালে যা ঘটেছিল তার ফলে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে থাকা মা ভারতীর অনেক সন্তানকে যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে।’’ বিষয়টি নিয়ে এ দিন মুখ খুলেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে উত্তর-পূর্বের দলগুলির সঙ্গে কথা বলছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেই আলোচনায় ঐকমত্য তৈরি হলে তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু এই বিল দেশের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’
উত্তর-পূর্বের এনডিএ-র শরিক দলগুলি অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিল-বিরোধী দাবি জোরদার করে তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর। তাই আজ সকালে অসম গণ পরিষদ, এনপিপি, এমএনএফ, আইপিএফটি, ইউডিপি, এইচএসপিডিপি-সহ বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পরে এনপিপি সভাপতি তথা মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা এবং অগপ নেতারা জানান, রাজনাথ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন। উত্তর-পূর্বের মানুষের আশঙ্কা ও ক্ষোভের কথা তাঁকে বোঝানো হয়েছে। মণিপুরের চিত্রপরিচালক অরিবাম শ্যাম শর্মা জানিয়েছেন, কেন্দ্রের আনা এই বিলের প্রতিবাদে পদ্মশ্রী ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
অসমে কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিজিৎ মজুমদার বলেন, “বিজেপির নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি অসমীয়া ও বাঙালি তো বটেই, বরাক-ব্রহ্মপুত্রের বাঙালিদের মধ্যেও বিভাজন আনছে। কিন্তু অসমের বাঙালিরাও সজাগ হচ্ছেন। তাই বেশ কিছু বাঙালি সংগঠন বিল-বিরোধী আন্দোলনের শরিক হয়েছে।”