আন্দোলনে সমর্থন অটুট রাখতে এ বার অসমের সিটু নেতারা ‘ধর্মের’ নামে শপথ করাচ্ছেন কর্মী-সমর্থকদের। পাপ-পূণ্যের খতিয়ান মনে করিয়ে জানাচ্ছেন, আন্দোলনে থাকবেন বলে পরে পিছিয়ে গেলে ‘পাপ’ হবে। বামপন্থী সিটু নেতাদের এমন কথায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সংগঠনের মধ্যেই। আর নেতাদের ব্যাখ্যা, এর কোনও তাত্ত্বিক দিক নেই। তবে আন্দোলনের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই তাঁরা কর্মী-সমর্থকদের বাঁধতে চাইছেন।
আজ শিলচরে প্রকল্প ভিত্তিক ঠিকাকর্মীদের এক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল সিটু। সেখানে ছিলেন অসম ইউনিটের সম্পাদক তপন শর্মা। সরকারি প্রকল্পের কর্মীদের, বিশেষ করে আশা-কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকা, মিড-ডে মিলের রন্ধনকর্মীরা রাজ্যে নিয়মিত পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। সিটু চায় এই বিষয়টিকে সামনে রেখে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে নামতে। কিন্তু আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মীরা পাশে থাকবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সিটু নেতৃত্বের। কাছাড় জেলা সিটুর নেতা সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অভিজ্ঞতা থেকেই দেখেছি, সরকারি প্রশাসনের ভয়ে বহু ক্ষেত্রেই সাধারণ কর্মীরা আন্দোলন থেকে সরে যান। তাই এই শপথ।’’
সম্মেলনে কর্মীদের সিংহভাগই মহিলা। বক্তব্য রাখতে উঠে সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক তপন শর্মা জানতে চান, পারিশ্রমিক আদায়ের এই আন্দোলনে কে কে পাশে থাকবেন? সকলেই হাত তোলেন। এই বামপন্থী নেতার বক্তব্য, ‘‘আমি ব্রাহ্মণ। আপনারা সবাই ধর্মকর্ম করেন। কেউ হিন্দু, কেউ মুসলমান। হাত তুলে, কথা দিয়ে যদি আন্দোলন থেকে সরলে কিন্তু ধর্মভ্রষ্ট হবেন। পাপ হবে।’’ কর্মীদের বিজেপির বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করতে গিয়ে বলেন, ‘‘রাম মিথ্যা বলতেন না। কিন্তু রামের নামে গেরুয়া বাহিনী মিথ্যাচার করছেন।’’ ঠিক হয়েছে ২ অগস্ট থেকে সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাকর্মীদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করা হবে। তার আগে তাঁদের ধর্মের দোহাই কেন পাড়তে হল? তপনবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা ধর্ম মানি না, তা নয়। সব ধর্মকে আমরা সম্মান করি।’’ ধর্মের নামে রাজনীতি করেন না বলেই তাঁর দাবি।