রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, অডিটর, শিল্পপতি বা ব্যাঙ্ক-কর্তাদের দিকে দায় ঠেলে পার পাচ্ছেন না অরুণ জেটলি। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের প্রতারণার তাঁরই ঘনিষ্ঠ এক বিজেপি নেতার দিকে আঙুল তুলল কংগ্রেস।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জেটলি আজ জানিয়েছেন, ব্যাঙ্কের পরিচালন কর্তৃপক্ষর ভূমিকা নিয়ে সরকার চিন্তিত। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যখন ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখায় প্রতারণা হচ্ছে, কেউই সতর্ক করছে না, তা কি দেশের জন্য চিন্তার কারণ নয়! ব্যাঙ্কের শীর্ষকর্তা থেকে বিভিন্ন স্তরের অডিট ব্যবস্থা মুখ ফিরিয়ে রাখবে বলে ঠিক করে, তা হলে চিন্তাজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়।’’ কিন্তু কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল আজ সাংবাদিক বৈঠক প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘পিএনবি-র বোর্ডে সরকারের প্রতিনিধি কে ছিলেন? তিনি কার ঘনিষ্ঠ? অমৃতসর লোকসভা কেন্দ্রে সদ্য যে উপনির্বাচন হয়েছে, সেখানে কি তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছিল?’’
কংগ্রেসের ইঙ্গিত পঞ্জাবের বিজেপি নেতা রাজেন্দ্রমোহন সিংহ ছিন্নার দিকে। ২০১৫-তে তিনি পিএনবি-র ডিরেক্টর নির্বাচিত হন। ছিন্না বরাবরই জেটলির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। পিএনবি-র ডিরেক্টর নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি অরুণ জেটলিকে তাঁর ‘পৃষ্ঠপোষক (মেন্টর)’ বলে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে অমৃতসর কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়ে ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহের কাছে হেরে যান জেটলি। অমরেন্দ্র পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে গত বছর সেখানে উপনির্বাচন হয়। বিজেপি প্রার্থী করে ছিন্নাকে। সে সময়ে তিনি পিএনবি-র ডিরেক্টর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
তদন্তকারীরা আগেই বলেছেন, পিএনবি-র কেলেঙ্কারিতে শুধু ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বা কেরানি পদের অফিসারেরাই জড়িত ছিলেন, তা নয়। উপর মহলেরও কেউ জড়িত থাকতে পারেন। সিবিআই আজ পিএনবি-র সিইও এবং এমডি সুনীল মেটা এবং এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর কে ভি ব্রহ্মাজি রাওকে মুম্বইয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। নীরব মোদী, মেহুল চোক্সীর সংস্থাকে নিয়ম ভেঙে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি বা লেটার অব আন্ডারটেকিং পাইয়ে দেওয়া নিয়েই জেরা করা হয়। সুনীল ওই পদে ২০১৭-র মে থেকে রয়েছেন। রাও রয়েছেন ২০১৪ থেকে। সিব্বলের প্রশ্ন, ‘‘পিএনবি-র বোর্ডে ওই বিজেপি নেতার ভূমিকা কী ছিল? তিনি অর্থ মন্ত্রকের প্রতিনিধি ছিলেন। তা হলে দায়িত্ব কার?’’
জেটলিদের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও। তাঁর দাবি, ‘‘প্রধানমন্ত্রী অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের জানাতে বলুন, কার কার ছেলেমেয়ে নীরব মোদীর সংস্থায় কাজ করতেন!’’