জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এনআরসি) নিয়ে জটিলতা বেড়ে চলেছে। এক দিকে ৪৫ বছর পুরনো কাগজপত্র খুঁজে পাওয়ার সমস্যা। অন্য দিকে সেবাকেন্দ্রে পৌঁছনোর যন্ত্রণা। বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছে, কাছাকাছি সেবাকেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের এলাকাটিকে সেখানে যুক্ত করা হয়নি। পাঠানো হয়েছে দূরের সেবাকেন্দ্রে।
এমনই এক অভিযোগ নিয়ে কয়েক দিন ধরে দৌঁড়ঝাঁপ করছেন কাছাড় জেলার তোপখানা পঞ্চায়েতের মানুষ। তাঁরা শিলচর বিধানসভা আসনের ভোটার। কিন্তু তাঁদের বড়খলা বিধানসভা আসনের হাতিছড়া সেবাকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। জেলাশাসক গোকুলমোহন হাজরিকার সঙ্গে তাঁরা এ নিয়ে কথা বলেন।
তারাপুরের পঞ্চায়েত সভাপতি মিঁঞা খান বলেন, ‘‘তারাপুর ও বালিঘাটের মানুষের জন্য ওই পঞ্চায়েত এলাকায় সেবাকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। তোপখানার জন্য পঞ্চায়েত এলাকায় তো নয়ই, কাছাকাছি কোনও পঞ্চায়েতে যোগ করা হয়নি। ঠেলে দেওয়া হয়েছে ৩৫ কিলোমিটার দূরে হাতিছড়ায়। সেখানে সহজে যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই। নৌকোয় নদী পেরিয়ে দীর্ঘ পথ হেঁটে পৌছতে হয়।’’
অসমে নাগরিক পঞ্জী তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ এই সেবাকেন্দ্র। কাছাড় জেলায় মোট ১৬০টি সেবাকেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে যে কেউ গিয়ে বিনা শুল্কে দেখে নিতে পারেন, তাঁর নিজের বা পূর্বপুরুষদের কারও নাম ১৯৬৬ বা ১৯৭১-র ভোটার তালিকায় রয়েছে কি না। থাকলে সেবাকেন্দ্র থেকেই শংসাপত্র দেওয়া হয়। এতে থাকছে লিগ্যাসি কোড-ও। এখানেই শেষ নয়, এই মাসে বাড়ি বাড়ি ঘুরে এনআরসি ফর্ম দেওয়া হবে। সেগুলি উপযুক্ত নথি-সহ পূরণ করে সেবাকেন্দ্রে জমা করতে হবে। তাই তোপখানার মানুষ উদ্বেগে। এত দূরে গিয়ে কী করে এনআরসি-র ফর্ম জমা দেওয়া যাবে।
জেলাশাসক গোকুলমোহন হাজরিকা জানিয়ে দেন, এখন কিছু করার নেই। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের হাতে নেই। তবু তিনি আশ্বাস দেন, নির্ধারিত দিনে তোপখানায় বসে ফর্মগুলি সংগ্রহ করা যায় কি না, তা দেখা হবে।