Congress

বন সংরক্ষণ আইন বদল কেন, ফের সরব কংগ্রেস

সংসদের চলতি অধিবেশনে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব বন সংরক্ষণ সংশোধনী বিল পেশ করেছেন। সেই বিল পাঠানো হচ্ছে সংসদের সিলেক্ট কমিটিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৩৮
Share:

জয়রাম রমেশ। ফাইল চিত্র।

আদানি গোষ্ঠীর মতো সংস্থাকে সুবিধা করে দিতেই মোদী সরকার বন সংরক্ষণ আইন সংশোধন করতে চাইছে বলে কংগ্রেস অভিযোগ তুলল। বন ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই মোদী সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, মোদী সরকার শিল্প মহলের স্বার্থে জঙ্গলের জমি অন্য কাজে লাগানোর রাস্তা সহজ করে দিতে চাইছে।

Advertisement

সংসদের চলতি অধিবেশনে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব বন সংরক্ষণ সংশোধনী বিল পেশ করেছেন। সেই বিল পাঠানো হচ্ছে সংসদের সিলেক্ট কমিটিতে। বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বিল পাঠানো হয়নি। স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, ইউপিএ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘আমি স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বলেই ওই কমিটিতে বিল পাঠানো হয়নি। সিলেক্ট কমিটিতে বিজেপির কোনও সাংসদকেই চেয়ারম্যান করা হবে। বিজেপিরই ৮০ শতাংশ সদস্য থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেমন চাইবেন, তেমনই রিপোর্ট তৈরি হবে।’’

বন সংরক্ষণ আইনে কী পরিবর্তন করতে চাইছে মোদী সরকার?

Advertisement

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৮০ সালের এই আইনের মূল কথা হল, অরণ্য এলাকায় কোনও অন্য ধরনের কাজ করা যাবে না। তার জন্য মন্ত্রকের অনুমতি লাগবে। সেই আইনে সংশোধন করে ‘জাতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত প্রকল্প ও নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্প’-এর ক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হচ্ছে। ১৯৯৬ সালের আগে পর্যন্ত ভারতীয় অরণ্য আইনে যে সব এলাকা অরণ্য বলে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে, তার জন্যই এই আইন প্রযোজ্য ছিল। ১৯৯৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট বলে, আভিধানিক অর্থে যে সব এলাকাকে জঙ্গল বলা হয় বা সরকারি খাতায় জঙ্গলের মতো এলাকা, সেখানেও এই আইন প্রযোজ্য হবে। মোদী সরকার এ বিষয়ে ধোঁয়াশা দূর করতে চাইছে। কোনটা অরণ্য, কোনটা নয়, তা সুস্পষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা করতে গিয়ে মোদী সরকার ১৯৯৬-এর আগের ব্যবস্থায় ফিরতে চাইছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ। পুরনো আইনের ইংরেজি নাম পাল্টে হিন্দিতে ‘বন সংরক্ষণ এবং সম্বর্ধন অধিনিয়ম’ রাখা হচ্ছে। আজ জয়রাম বলেন, ‘‘এর ফলে অরণ্যের অধিকার আইনও লঙ্ঘন হচ্ছে। জঙ্গলে যাঁদের অধিকার, সেই আদিবাসীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় আদানি বিদ্যুৎ প্রকল্পের এ কারণেই বিরোধিতা হচ্ছে।’’

কংগ্রেসের অভিযোগ, আগে মোদী সরকার কোনও বিল সংসদীয় কমিটিতে না পাঠিয়েই সংসদে পাশ করিয়ে নিত। এখন যে সব স্থায়ী কমিটিতে কংগ্রেসের চেয়ারম্যান রয়েছে, সেখানে বিল না পাঠিয়ে আলাদা সিলেক্ট কমিটি তৈরি হচ্ছে। জীববৈচিত্র্য আইনে সংশোধনী বিলও বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটিতে না পাঠিয়ে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল। বিজেপি সাংসদের নেতৃত্বে সিলেক্ট কমিটি তৈরি হয়। গত বছর বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনে সংশোধন করা হয়েছে। তাতে হাতির ব্যবসায় ছাড় দেওয়া হয়েছে। এর ফলে হাতির চোরাচালান বাড়বে। তথ্য সুরক্ষা বিলও শশী তারুরের নেতৃত্বাধীন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটিতে না পাঠিয়ে বিজেপি সাংসদদের নেতৃত্বে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল। জয়রাম বলেন, ‘‘এক দিকে আমরা চিপকো আন্দোলন, প্রোজেক্ট টাইগারের পঞ্চাশ বছর পালন করছি। অন্য দিকে ‘ইজ় অব ডুয়িং বিজনেস’-এর নামে অরণ্য, পরিবেশ নষ্ট করার রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন