ডেরায় পাল্টি খেল বিজেপি, অমিতকে নিশানা কংগ্রেসের

কংগ্রেসের অভিযোগ, খোদ অমিত শাহই গুরমিত রাম রহিমের ভক্তদের হিংসার জন্য দায়ী করেছিলেন আদালতকে। আর বিজেপির সাংসদ সাক্ষী মহারাজ তো শুক্রবারই প্রকাশ্যে গুরমিত ও তার ভক্তদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন আদালতের ভূমিকা নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৪৬
Share:

অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।

রাম রহিম জেলে যেতেই ভোল পাল্টাল বিজেপি।

Advertisement

কংগ্রেসের অভিযোগ, খোদ অমিত শাহই গুরমিত রাম রহিমের ভক্তদের হিংসার জন্য দায়ী করেছিলেন আদালতকে। আর বিজেপির সাংসদ সাক্ষী মহারাজ তো শুক্রবারই প্রকাশ্যে গুরমিত ও তার ভক্তদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন আদালতের ভূমিকা নিয়ে। বলেছিলেন, মিথ্যা মামলায় রাম রহিমকে শাস্তি দিলে দায়ী থাকবে আদালতই। আর গত কাল গুরমিতের বিশ বছর সাজা হতেই ফের উলটপুরাণ গাইছে বিজেপি। দল এখন রাম রহিমের থেকে দূরত্ব বজায় রাখছে। সাক্ষী মহারাজ আজ বলছেন, ‘‘আদালত ঠিকই করেছে। আস্থার নামে অধর্ম বরদাস্ত করা যায় না। এ ধরনের লোকদের সামাজিক বহিষ্কার করা উচিত।’’

বিজেপির ভোল বদলের নমুনা অবশ্য এই প্রথম নয়। ব্যক্তিপরিসরের স্বাধীনতা মামলায় সুপ্রিম কোর্টে আগাগোড়া নরেন্দ্র মোদী সরকার বলে এসেছে, এটি মোটেই মৌলিক অধিকার নয়। তবে শীর্ষ আদালত সেই যুক্তিকে খারিজ করে ব্যক্তিপরিসরের স্বাধীনতাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তার পরেই সরকারের মাথারা বলতে শুরু করেছেন, সুপ্রিম কোর্ট যা বলেছে, সেটিই তাঁদের বরাবরের মত। এমনকী অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও সংসদে বলেছেন, সরকারও ব্যক্তিপরিসরের স্বাধীনতাকে মৌলিক অধিকার বলে এসেছে। অন্য উদাহরণও রয়েছে। গুজরাত থেকে রাজ্যসভায় আহমেদ পটেলকে হারাতে আদাজল খেয়ে নেমেছিলেন অমিত শাহ। কংগ্রেস বিধায়কদের পিছু নিয়ে আয়কর হানাও হয় বেঙ্গালুরুতে। কিন্তু হেরে যাওয়ার পরেই বিজেপি বলতে থাকে, আহমেদ পটেলকে হারানোর জন্য তাদের কোনও তাগিদই ছিল না।

Advertisement

আরও পড়ুন: গুরমিতকে নিয়ে আরও অভিযোগ

ডেরা প্রধানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলাতেও একই ভাবে ডিগবাজি খেল বিজেপি। হরিয়ানার ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদী থেকে বিজেপির তাবড় তাবড় নেতারা গিয়ে নতমস্তক হয়েছেন রাম রহিমের। এ বার পাশের রাজ্য কংগ্রেস শাসিত পঞ্জাবে হিংসা না হলেও হরিয়ানায় আগুন জ্বলেছে। সেখানে ডেরা-ভক্তদের জমায়েতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। খোদ হাইকোর্টও হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে তোপ দেগেছে। কিন্তু গুরমিতের কারাবাসের পরেই উল্টো সুরে গাইছে বিজেপি। দলের সাধারণ সম্পাদক ও হরিয়ানার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অনিল জৈন বলেন, ‘‘আস্থার জন্য কোনও নেতা বাবার কাছে গিয়ে থাকবেন। কিন্তু এ ধরনের লোকেদের থেকে দূরত্ব রাখা উচিত।’’

কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির মন্তব্য, ‘‘খোদ বিজেপি সভাপতি বলেছেন হরিয়ানার হিংসার জন্য বিচারক দায়ী থাকবেন। সংবাদপত্রে তা বেরিয়েছে। রায় পিছনোর জন্যও বিচারককে অনুরোধ করা হয়েছে।’’ কংগ্রেসের অভিযোগ, একে তো ভিড়কে একজোট হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে খট্টর সরকার। আর ভক্তদের জমায়েতের মধ্য দিয়ে বিচার ব্যবস্থাকে ধমকানোর ষড়যন্ত্র করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। আর এখন ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে বিপাকে পড়েই ভিন্ন সুরে গাইছে বিজেপি। এই ভোল বদল তাদের অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন