তাঁরই ইস্তফার দাবিতে সংসদ অচল। তাই আজ টুইটারেই ললিত মোদী কাণ্ডে নিজের অবস্থান জানালেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। জানালেন, সংসদই তাঁর বক্তব্য জানানোর প্রকৃত মঞ্চ। কিন্তু বিরোধীরা সংসদ অচল করে রাখায় সেই সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। তবে বিদেশমন্ত্রী এ ভাবে পরিস্থিতি কিছুটা সামলানোর চেষ্টা করলেও পিছু হটতে রাজি নয় কংগ্রেস।
আজ টুইটারে বেশ কিছু প্রশ্নের জবাবে সুষমা জানান, আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত প্রাক্তন ক্রিকেট কর্তা ললিত মোদীকে ভ্রমণের নথি দেওয়া হবে কিনা তা ব্রিটিশ সরকারকে নিজেদের আইন ও নীতি মেনে স্থির করার কথা বলেছিলেন তিনি। ললিতের হয়ে কোনও সুপারিশ করেননি। ব্রিটিশ সরকারও নিজেদের আইন মেনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লন্ডনে ললিতের হয়ে ব্রিটিশ দরবার করছিলেন সে দেশের পার্লামেন্টে স্বরাষ্ট্র দফতর সংক্রান্ত সিলেক্ট কমিটির চেয়ারপার্সন কিথ ভাজ। সুষমা কিথ ভাজকেও ফোন করে ললিতের পাশে থাকার বার্তা দেন বলে অভিযোগ। আজ ওই অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী।
বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনেই তিনি এ নিয়ে বিতর্ক চেয়েছিলেন। মন্ত্রী হিসেবে তাঁর বক্তব্য সংসদেই জানানো উচিত। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা সংসদ অচল করে রাখছেন।
তবে সুষমার বক্তব্যে যে চিড়ে ভিজছে না তা বুঝিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা। দলীয় মুখপাত্র শাকিল আহমেদ বলেন, ‘‘বিদেশমন্ত্রীকে ইস্তফা দিতেই হবে। তা না হলে সংসদ অচল করে রাখা হবে।’’ ‘মানবিক কারণে’ সুষমা ললিত মোদীকে সাহায্য করেছিলেন বলে আগে জানিয়েছিল কেন্দ্র। আজ সেই প্রসঙ্গ তুলে শাকিলের কটাক্ষ, ‘‘মানবিক কারণে সাহায্য কেউ অন্ধকারে করেন না। সুষমার ললিতের পাশে দাঁড়ানোর কথা বিদেশসচিবও জানতেন না।’’
গত কয়েক দিন সংসদে রণংদেহি মূর্তির পরে অবশ্য আজ সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে একেবারেই অন্য মেজাজে দেখা গিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরের নেতাদের। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের রাষ্ট্রপতিত্বের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ রাষ্ট্রপতি ভবনের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে একটি বই প্রকাশ ও একটি একাঙ্ক নাটিকার আয়োজন ছিল। তার পরে ছিল নৈশভোজ। তাতে স্বভাবতই ছিল রাজনৈতিক তারকার ছড়াছড়ি।
বিহারে থাকায় আসতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী। সকালেই প্রণববাবুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে রাজনাথ সিংহ, কলরাজ মিশ্র, উমা ভারতীর পাশাপাশি হাজির ছিলেন সুষমা স্বরাজও। কংগ্রেস শিবির থেকে রাহুল-সনিয়ার সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদের মতো নেতারা। নৈশভোজের টেবিলে মনমোহনের বাঁ দিকে ছিলেন সুষমা। তাঁর ঠিক উল্টো দিকেই ছিলেন সনিয়া-রাহুল।
রাজনীতির কচকচি যে দিল্লিকে সৌজন্য ভুলিয়ে দেয়নি, তা ফের এক বার প্রমাণ হল প্রণববাবুর আসরেই।