অরুণ জেটলি। —ফাইল চিত্র।
যত দোষ, নন্দ ঘোষ!
লোকসভা ভোটের আগে খাস দিল্লিতে কৃষকদের বিক্ষোভ মোদী সরকারের স্নায়ুর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। কৃষকদের দুরবস্থার জন্যও এখন তাই কংগ্রেসের সরকারকেই দায়ী করছে তারা। চাপ কাটাতে আজ সরকারের হয়ে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি কৃষকদের সমস্যা নিয়ে কলম ধরেছেন। খাঁটি আইনজীবীর মতোই সরকারের হয়ে সওয়াল করতে নেমে এক দিকে তিনি কৃষকদের দুরবস্থার জন্য আগের কংগ্রেস সরকারকে দায়ী করেছেন। অন্য দিকে দাবি করেছেন, মোদী জমানায় কৃষিতে উৎপাদন বেড়েছে। গ্রামের মানুষদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে।
লোকসভা ভোটে চাষিদের সমস্যাই অন্যতম প্রধান ইস্যু বলে ঘোষণা করেছেন কংগ্রেস সভাপতি। জেটলির পাল্টা যুক্তি, মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে চাষিদের সমস্যা শুরু হয়নি। তার মূলে রয়েছে কংগ্রেস আমলে গ্রামের রাস্তা, সেচের মতো পরিকাঠামোয় অর্থ খরচ না করা। তাঁর যুক্তি, স্বাধীনতার পরের ৬৭ বছরে গোটা দেশে ৩.৮ লক্ষ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক তৈরি হয়েছিল। সেই তুলনায় মোদী সরকারের চার বছরেই ১.৯ লক্ষ কিলোমিটার গ্রাম সড়ক তৈরি হয়েছে। খুব শীঘ্রই প্রতিটি গ্রামে পাকা রাস্তা ধরে পৌঁছনো যাবে। মোদী জমানায় কী ভাবে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কাজ হয়েছে, কী ভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, বিনা মূল্যে রান্নার গ্যাসের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, সে সবও ফলাও করে লিখেছেন তিনি।
কিন্তু দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনের মূল দাবি ছিল, কৃষকদের সব ঋণ মকুব করে দিতে হবে। এবং স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ মেনে চাষের খরচের দেড়গুণ ফসলের দাম দিতে হবে। যার প্রতিশ্রুতি ২০১৪-য় বিজেপির ইস্তাহারেই ছিল। এই দু’টি বিষয়ে বিল আনার জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশনের দাবিও তুলেছিলেন তাঁরা। কংগ্রেসের দিকে আঙুল তুলে মোদী সরকারের সাফল্য বর্ণনা করলেও এই দাবি নিয়ে কিন্তু নীরব জেটলি।
এ সব দেখেশুনে কৃষক সভার নেতা হান্নান মোল্লা বলছেন, ‘‘জেটলির ফিরিস্তি অনুযায়ী কৃষকদের যদি এত উন্নয়নই হত, তা হলে ফসল কাটার মরসুমে তাঁদের রাজধানী অবধি উজিয়ে এসে বিক্ষোভ দেখাতে হত না! মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ চাষিকেও ৭৫০ কিলোগ্রাম পেঁয়াজ বিক্রি করে ১০৬৪ টাকা পেতে হত না! ’’
এ দিকে মহারাষ্ট্রের ওই পেঁয়াজ চাষি সঞ্জয় শাঠের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কর্তারা আজ যোগাযোগ করেন। সঞ্জয় পরে জানান, ‘‘জেলা প্রশাসনের কর্তারা বললেন প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ওঁদের আমার সঙ্গে চাষের হাল নিয়ে কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’