ভোটের টানে রথ ছোটাবেন রাহুলও

রথযাত্রায় এ বার রাহুল গাঁধীও। লালকৃষ্ণ আডবাণীদের হাত ধরে কয়েক দশক ধরে যা ছিল গেরুয়া শিবিরেই সীমাবদ্ধ, সেই ঘরানায় এখন পা দিতে চলেছেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৬ ০৪:০২
Share:

রথযাত্রায় এ বার রাহুল গাঁধীও।

Advertisement

লালকৃষ্ণ আডবাণীদের হাত ধরে কয়েক দশক ধরে যা ছিল গেরুয়া শিবিরেই সীমাবদ্ধ, সেই ঘরানায় এখন পা দিতে চলেছেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল। আগামী সপ্তাহ থেকে প্রায় এক মাস ধরে গোটা উত্তরপ্রদেশ চষে বেড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন তিনি। ৫৫ টি লোকসভা, ২২৩ টি বিধানসভা কেন্দ্র ধরে প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার হবে তাঁর রথের যাত্রাপথ।

প্রচার চালাতে অতীতে রথ নিয়ে বেরিয়েছেন আডবাণী। আধুনিক বাসকেই রথের মতো সাজিয়ে এক টানা দীর্ঘ পথে প্রচার চালিয়েছিলেন বিজেপি নেতা। পরে এই দীর্ঘ যাত্রা বা রোড শো-কেই রথযাত্রার সঙ্গে তুলনা করা হতো। রাহুল এ বার তেমনই একটি যাত্রায় বের হচ্ছেন। কংগ্রেস নেতারা যদিও সঙ্ঘের অনুকরণ থেকে বাঁচতে একে রথযাত্রা বলতে রাজি নন। তবে তাঁরা মানছেন, সাম্প্রতিক অতীতে গোটা দেশে দল যত রাজনৈতিক প্রচার চালিয়েছে, তার মধ্যে এ ভাবে এতটা পথ পেরিয়ে টানা প্রচারের কোনও নজির নেই।

Advertisement

আসলে রাহুলকে দিয়ে গো-বলয়ের সব থেকে বড় রাজ্য এফোঁড়-ওফোঁড় করার পরিকল্পনার নেপথ্যে রয়েছেন নির্বাচনী কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে কংগ্রেসের সাংগঠনিক অবস্থা আদৌ ভাল নয়। এই অবস্থায় অনেক মাস ধরেই তিনি রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে প্রায় ধাক্কা দিয়ে মাঠে নামাতে চাইছেন। খোদ সনিয়া গাঁধীকে দিয়েও নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে রোড-শো করিয়েছেন কিশোর। কিন্তু সেই সভাতেই জ্বরে কাবু হয়ে পড়েন সনিয়া। কাঁধের হাড়ও ভাঙে তাঁর। ফলে উত্তরপ্রদেশ নিয়ে এখন রাহুলের উপরেই ভরসা করছে দল।

বড় কোনও সভা না করে রোড-শোর মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে এ বার প্রচারের পরিকল্পনা করেছে কংগ্রেস। যাতে ছোট শহর, গ্রাম, গরিব কৃষক, শ্রমিকের কাছে পৌঁছে যেতে পারেন রাহুল। পথের মাঝে নিজস্ব ভঙ্গিতে কোথাও থেমে ছোট্ট জটলায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতা সেরে নিতে পারেন।

আজ এআইসিসি-র উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের পূর্ব প্রান্তে দেওরিয়া থেকে রাহুল গাঁধীর যাত্রা শুরু হবে। সমাজের সব অংশের সমস্যার কথা তিনি শুনবেন। প্রায় ৩০ দিন ধরে এই যাত্রা চলবে। মাঝে কিছু দিন বিরতি হবে।’’ কিন্তু যাত্রা কবে শেষ হবে, তা জানায়নি কংগ্রেস। দলের এক শীর্ষ নেতার মতে, রাহুলের রথযাত্রা শুরু হলে দেখা হবে তাতে কতটা সাড়া মিলছে। তার পরেই এ সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী শীলা দীক্ষিত, গুলাম নবিরা বাসে করে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন প্রান্তে রোড-শো করছেন। প্রশান্ত কিশোরের কৌশলে ভর দিয়ে কংগ্রেস মূলত ব্রাহ্মণ ভোটকে টানতে চাইছে। তবে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণ ভোট দিয়ে যে বৈতরণী পার হওয়া যাবে না, তা ভালই জানেন কংগ্রেস নেতারা।

তাই রাহুলকে কাজে লাগিয়ে সমাজের সব অংশকে কাছে টানতে মরিয়া কংগ্রেস। রাহুলের যাত্রার সাফল্য দেখে পরের ধাপে প্রিয়ঙ্কাকেও মাঠে নামানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন