প্রশ্নটা আজ সারা দিন ধরেই ঘুরপাক খেয়েছে রাজধানীর রাজনৈতিক মহলে। লঙ্কায় গেলেই কি রাবণ হতে হয়? নরেন্দ্র মোদী কি ইন্দিরা গাঁধীর পথে হাঁটছেন?
৪১ বছর আগে, ২৫ জুন রাতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন ইন্দিরা। আজ সকাল থেকে নরেন্দ্র মোদী আর অরুণ জেটলি পৃথক মঞ্চ থেকে সেই প্রসঙ্গ তুলে গণতন্ত্র, আর্থিক দুর্দশা আর পরিবারতন্ত্রের জন্য কংগ্রেসকে নিশানা করতেই রে-রে করে উঠলেন বিরোধীরা। গত কালই তাঁর দলের এক বিধায়ককে দিল্লি পুলিশ সাংবাদিক বৈঠক থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে অরবিন্দ কেজরীবাল বলেছিলেন, মোদী দিল্লিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। আর আজ মোদী-জেটলির কথা শুনে কংগ্রেসের কটাক্ষ, ঘোষণা না করলেও গোটা দেশেই অঘোষিত জরুরি অবস্থা জারি করেছেন মোদী! সে উত্তরাখণ্ড, অরুণাচলে সরকার উৎখাত করা হোক বা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে কানহাইয়া কুমারকে গ্রেফতার বা হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া রোহিত ভেমুলাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়া— সবেই জরুরি অবস্থার ছাপ।
ঘোষিত আর অঘোষিত— জরুরি অবস্থা পালন নিয়ে তরজায় এখন সরগরম দিল্লি। সকালে রেডিওয় ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে ২৬ জুনের এই দিনটিতে গোটা দেশকে জেলখানা বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁর সরকারের দু’বছরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। জনগণের অংশিদারিত্ব বেড়েছে। মোদীর মতে, শুধুমাত্র ভোটের মাধ্যমেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। মানুষ ও সরকারের মধ্যে দূরত্ব গণতন্ত্রের যে বিপর্যয় ডেকে এনেছে, সেটি দূর করাই তাঁর লক্ষ্য।
এর পরেই জেটলি তাঁর ব্লগে নিশানা করেন কংগ্রেসকে। তাঁর কথায়, ইতিহাসের পাতা ওল্টালেই দেখা যাবে আর্থিক সংস্কারকে দু’দশক পিছিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। দেশে পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছে। জবাবে কংগ্রেসের মুখপাত্র টম বডক্কন বলেন, ‘‘এই সরকার চতুর। তাই ঘোষিত জরুরি অবস্থা জারি না করে অঘোষিত জরুরি অবস্থা জারি করবে।’’