ফাইল ছবি
রাহুল গান্ধীকে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের সমালোচনা করতে গিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব কার্যত তৃণমূলের সুরে সুর মেলাল। কংগ্রেসের অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতারা যখন তৃণমূলে ছিলেন, তখন তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই-ইডি পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিতেই তাঁদের বিরুদ্ধে সমস্ত পদক্ষেপে ইতি পড়েছে। এই প্রসঙ্গে আজ এআইসিসি-র মঞ্চ থেকে কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন মুকুল রায়ের উদাহরণও টেনে এনেছেন।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বৈঠক করতে দিল্লিতে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাহুল গান্ধীকে ইডি-র ‘হেনস্থা’-র নিন্দা করেছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবারকেও একই ভাবে সিবিআই-ইডি হেনস্থা করছে বলে সমালোচনা করেছিলেন। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সনিয়া-রাহুল গান্ধীকে ইডি সমন করলেও তার আগে পর্যন্ত তৃণমূল নেতৃত্ব গান্ধী পরিবারের পাশে দাঁড়ায়নি। আজ কংগ্রেস নেতারা মমতার সুরে শুভেন্দুদের নিশানা করায় রাজনৈতিক শিবিরের প্রশ্ন, কংগ্রেস কি মমতার রাজনৈতিক সৌজন্যের প্রতিদান দিল?
সোমবার রাহুল গান্ধীকে চতুর্থ দিনের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। গত সপ্তাহের মতোই এ দিনও কংগ্রেস নেতারা প্রতিবাদে নেমেছেন। তার আগে কংগ্রেসের সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে এআইসিসি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অজয় মাকেন বলেন, ইডি ও সিবিআই ‘গ্লো অ্যান্ড লাভলি’ প্রকল্প চালাচ্ছে। বিরোধী দলে থাকলে রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডি মামলা করছে। সেই নেতারাই বিজেপিতে যোগ দিলে সিবিআই-ইডি হাত গুটিয়ে বসে পড়ছে। উদাহরণ হিসেবে মাকেন বলেন, “মুকুল রায় যত দিন অন্য দলে ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ইডি-র মামলা ছিল। তার পরে উনি বিজেপিতে চলে গেলেন, ইডি-র তদন্তও শেষ হয়ে গেল। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অনেক তদন্ত হয়েছে। যখনই উনি বিজেপিতে চলে গেলেন, সব ঠিক হয়ে গেল। এ এক দীর্ঘ তালিকা। বিজেপিতে যোগ দাও, দুধে ধোয়া হয়ে যাও, সব মোকদ্দমা বন্ধ হয়ে যাবে।” কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সোমেন মিত্রকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন মাকেন।
কংগ্রেস আজ অসমের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, মহারাষ্ট্রের নারায়ণ রাণেকে নিয়েও একই প্রশ্ন তুলেছে। অভিযোগ, দু’জনই কংগ্রেসে থাকার সময় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। বিজেপতে যোগ দিতেই সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিজেপির নেতা বলে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা, ছত্তীসগঢ়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ হয় না বলেও কংগ্রেসের অভিযোগ। মাকেন বলেন, “ইডি-র কাছে এখন ৫,৪২২টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ৯৮ শতাংশ, অর্থাৎ ৫,৩১০টি মামলাই মোদীজি গত আট বছরে দায়ের করিয়েছেন।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।