Manipur Violence

‘মণিপুরে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, আর উনি সংসদে বসে মশকরা করছেন’! মোদীকে নিশানা রাহুলের

তাঁর ১৯ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় কখনও মণিপুরের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হননি জানিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির ফলে মণিপুর আর অখণ্ড একটি রাজ্য নেই।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৩ ১৭:৩০
Share:

নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে) এবং রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৃহস্পতিবারের লোকসভার জবাবি বক্তৃতার প্রত্যুত্তর দিলেন রাহুল গান্ধী। মোদীর ‘হাসি আর মশকরা’র জবাবে শুক্রবার কংগ্রেস সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে বললেন, ‘‘উনি সারা ভারতের প্রতিনিধি। আমারও প্রতিনিধি। কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদের গুরুত্ব কী, সেটাই উনি বোঝেন না।’’

Advertisement

লোকসভায় অনাস্থা বিতর্কের শেষে বৃহস্পতিবার মোদীর দু’ঘণ্টা ২০ মিনিটের জবাবি বক্তৃতার বড় অংশ জুড়েই ছিল নিজের সরকারের ‘সাফল্যের’ দাবি এবং জওহরলাল নেহরু থেকে মনমোহন সিংহ পর্যন্ত কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রীদের জমানার ‘ব্যর্থতার’ প্রসঙ্গ। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন পূর্বতন সরকারগুলির নানা ‘ভুল’ তুলে ধরে তিনি হেসেছেন। কটাক্ষ করেছেন। আর তাতে ধুয়ো তুলেছেন ট্রেজারি বেঞ্চের সাংসদেরা। সেই প্রসঙ্গের উল্লেখ করে শুক্রবার রাহুল বলেন, ‘‘মণিপুরে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, মহিলারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, আর উনি (মোদী) হেসে হেসে কথা বলেছেন, মশকরা করেছেন। আলোচনার বিষয় কিন্তু কংগ্রেস ছিল না। আমি ছিলাম না। আলোচনার বিষয় ছিল মণিপুরের বর্তমান সঙ্কট এবং তার সমাধানের উপায়।’’

রাহুল বুধবার অনাস্থা বিতর্কে বলেছিলেন, ‘‘মণিপুরে ভারতমাতার হত্যা করেছে বিজেপি।’’ যা নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছে শাসক শিবির। রাহুল তাঁর ওই মন্তব্যের ‘ব্যাখ্যা’ দিয়ে বলেন, ‘‘হ্যাঁ আমি বলেছি। কারণ বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির জেরে মণিপুর আর অখণ্ড একটি রাজ্য নেই। দু’টুকরো হয়ে গিয়েছে।’’ রাহুলের দাবি, তাঁর ১৯ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় কখনও মণিপুরের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে তাঁর জুন মাসের মণিপুর সফরের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘‘আমি যখন মেইতেইদের এলাকায় গিয়েছিলাম, তখন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আমি স্বাগত কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীদের দলে কোনও কুকি থাকলে তাঁকে গুলি করে খুন করা হবে। ঠিক উল্টো কথা জানানো হয়েছিল, কুকিদের তরফে। যখন তাঁদের এলাকায় গিয়েছিলাম।’’ রাহুল জানান, সেই ‘ফরমান’ মেনে চলতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর কথায়, ‘‘মণিপুর যে আর অখণ্ড নেই, এটাই তার উদাহরণ। ভারতীয়ত্বের ভাবনাকে মণিপুরে খুন করেছে বিজেপি।’’

এর পরেই মোদীকে নিশানা করে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির মন্তব্য, ‘‘মণিপুরের এই সঙ্কটের মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল দেশের আওয়াজ হয়ে ওঠা। কিন্তু সে পথে না হেঁটে তিনি সাধারণ রাজনীতিকদের মতো ক্ষুদ্র রাজনীতি করছেন। নির্লজ্জের মতো অধিবেশনে বসে থেকেছেন, হেসেছেন, টিপ্পনী কেটেছেন। আর তাঁর দলের অন্য সাংসদেরা তাতে ধুয়ো তুলেছেন।’’

গত ৩ মে থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই বিজেপি শাসিত রাজ্যে ধারাবাহিক হিংসায় দেড়শোর বেশি প্রাণহানি আর হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া হওয়ার পরেও যে মোদী সেখানে যাননি, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘ওঁর না যাওয়ার কারণটা আমি জানি। কিন্তু প্রকাশ্যে বলতে চাই না।’’ ভারতীয় সেনাকে দায়িত্ব দিলে দু’দিনে মণিপুরে অশান্তি বন্ধ হয়ে যাবে বলে দাবি করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সে পথে হাঁটেনি।’’

বুধবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুরের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহকে সরানোর সম্ভাবনা খারিজ করে বলেছিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের সব নির্দেশ মেনেই কাজ করছেন।’’ এ প্রসঙ্গে রাহুলের প্রশ্ন, ‘‘তবে কি বুঝতে হবে মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাজার হাজার আগ্নেয়াস্ত্র লুটের পিছনে কোনও কারণ রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন