রাহুল গাঁধী। ছবি: সংগৃহীত।
‘উত্তাপ বাড়ছে গুজরাত ভোটের। আজ থেকে ভোট পর্যন্ত রোজ নরেন্দ্র মোদীকে একটি করে প্রশ্ন ছুড়বেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু এরই মধ্যে সেজে উঠছে দিল্লির কংগ্রেস দফতর। ভোটের মধ্যেই রাহুল গাঁধীর অভিষেকের জন্য।
পরশু থেকে শুরু হচ্ছে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া। কংগ্রেস সূত্রের মতে, আগামী সোমবার সভাপতি পদের জন্য মনোনয়ন পেশ করতে পারেন রাহুল গাঁধী। ৪ ডিসেম্বরই মনোনয়ন পেশের শেষ দিন। পরের সোমবার ১১ ডিসেম্বর নাম প্রত্যাহারের শেষ দিন। অন্য কেউ আর মনোনয়ন পেশ করছেন না, সেটি ধরে নিয়ে ১১ তারিখেই রাহুলকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি ঘোষণার জন্য রাজধানীতে একটি ‘মেগা-শো’-এর আয়োজনও করছে কংগ্রেস। গোটা দেশের প্রায় তিন হাজার কংগ্রেস নেতা-কর্মীকে সে দিন দিল্লিতে ডাকা হচ্ছে।
নতুন সভাপতিকে স্বাগত জানাতে সেজে উঠছে এআইসিসির সদর দফতরও। দিল্লির ২৪ আকবর রোডে সনিয়া গাঁধীর ঘরটি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। পাশে সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর ঘরটিও আপাতত বন্ধ। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের মতে, রাহুল গাঁধী সভাপতি হওয়ার পরেও সনিয়ার ঘর বদল করা হবে না। শুধু ঘরের বাইরের ‘নেমপ্লেট’ বদল হবে। নতুন করে আবার ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকে স্থির হবে সনিয়া গাঁধীর ভূমিকা কী হবে। কংগ্রেস দফতরে সনিয়ার বড় ছবিও সরানো হবে না, তারই পাশে জুড়বে রাহুলের ছবি।
কংগ্রেসের এক নেতার মতে, গুজরাতের প্রথম দফার ভোট ৯ ডিসেম্বর। তার আগেই স্পষ্ট হয়ে যাবে রাহুলই হচ্ছেন সভাপতি। আর ১৪ ডিসেম্বর পরের দফার ভোটের আগে রাহুলের নাম ঘোষণাও হয়ে যাবে। ফলে গুজরাতের ভোটে শেষ বাজারে হাওয়া তুলতে রাহুলের রাজনৈতিক ওজন কাজে লাগবে। গুজরাতের ভোটে লড়াই আর একতরফা নয়। শেষ পর্যন্ত যে হাওয়া ধরে রাখতে পারবে, জয় তারই হবে। ফলে ভোটের মধ্যে রাহুলের সভাপতি হওয়াটা মোদীর রাজ্যে কংগ্রেসের পক্ষে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। গুজরাতে প্রচারে গিয়ে মোদী এ দিন রাহুলের সভাপতি হওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে কটাক্ষ করেন। বলেন, ‘‘দেশে এখন তিনটি ভোট হচ্ছে। গুজরাতের মতো রাজ্যে বিধানসভা ভোট, উত্তরপ্রদেশে পুরভোট আর কংগ্রেসের সভাপতি ঠিক করার ভোট। প্রথম দু’টো ভোটে বিজেপিই জিতবে। তবে কংগ্রেসের ভোটে একটি পরিবারের জয় হবে।’’ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের মন্তব্য, ‘‘গুজরাতের ফল ঘোষণার পরে যখন দেখা যাবে বিজেপিই জিতেছে, তখন আর রাহুলকে সভাপতি করা মুশকিল। সেটা বুঝেই আগে ভাগে তাঁকে সভাপতি করা হচ্ছে।’’ শুধু বিজেপির কটাক্ষই নয়, রাহুলের অভিষেকের আগে অস্বস্তি কংগ্রেস শিবিরেও। রবার্ট বঢ়রার পরিবারের সদস্য ও কংগ্রেস নেতা শাহেজাদ পুনাওয়ালা এ দিন দাবি করেন, সভাপতি নির্বাচনের গোটা প্রক্রিয়াটাই সাজানো। রাহুলকে যাঁরা ভোট দেবেন, তাঁরা নির্বাচিত নয়, মনোনীত সদস্য।
কংগ্রেস অবশ্য এ সবে আমল দিচ্ছে না। সভাপতি হয়ে কী করবেন, রাহুল তার একটি রূপরেখাও নেতাদের জানিয়েছেন। সনিয়া গাঁধী ১০ জনপথে থাকলেও পাশের ২৪ আকবর রোডে সচরাচর আসেন না। কিন্তু ইন্দিরা কিংবা রাজীব গাঁধীর মতোই রাহুল নিয়মিত এআইসিসি দফতরে বসবেন বলে জানিয়েছেন। সে কারণে তাঁরই নির্দেশে পুরনো আসবাব সরানো হচ্ছে, ভবনের ভাঙাচোরা অংশ সারিয়ে নতুন করে সাজানো হচ্ছে।