সংসদে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হতে না দেওয়ার জন্য সরকার দুষছে কংগ্রেসকে। অথচ ঠিক উল্টোটাই দেখা যাচ্ছে রিয়েল এস্টেট বিলটির ক্ষেত্রে। কংগ্রেসই চাপ দিচ্ছে, যাতে ওই বিলটি যথা সম্ভব দ্রুত রাজ্যসভার আলোচনায় তোলা হয়। সঙ্গে তারা এ-ও জানাচ্ছে যে, বিলটি পাশ করানোর ব্যাপারে কংগ্রেস সহযোগিতা করবে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে চিঠিও দিয়েছেন দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় মাকেন।
হঠাৎ এই বিলটি নিয়ে কংগ্রেসের তৎপর হয়ে ওঠার কারণ কী?
প্রথম কারণ, ইউপিএ সরকার রাজ্যসভায় এই বিলটি এনেছিল। মাকেন তখন ছিলেন মনমোহন সিংহ সরকারের আবাসন ও দারিদ্র-দূরীকরণ মন্ত্রী। বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে মাপজোক, দাম কিংবা সময়ে হস্তান্তর না হওয়া ইত্যাদি নানা
দিক নিয়ে হয়রান হতে হয় ক্রেতাদের। এই হয়রানি ও দুর্নীতি রোধে ২০১৩ সালে বিলটি আনা হয়েছিল।
দ্বিতীয় কারণ, বিলটির সঙ্গে মধ্যবিত্তের স্বার্থ প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত। মোদী সরকারকে গরিব, কৃষক ও দলিতের বিরোধী তকমা দিয়ে টানা প্রচার চালাচ্ছেন কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গাঁধী। এর মধ্যে এই
বিলটি নিয়ে সরব হলে মধ্যবিত্তের পাশে থাকারও বার্তা দিতে পারবে কংগ্রেস। কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গাঁধী সে কারণেই রিয়েল এস্টেট (রেগুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) বিলটি নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি বাড়ি-ক্রেতাদের একটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করার পরেই রাহুল দলে জানিয়ে দেন বিলটি পাশের ব্যাপারে কংগ্রেস চাপ দেবে। এ নিয়ে টুইটও করেন তিনি। বাড়ি-ক্রেতাদের ওই সংগঠনটির দাবি, বেঙ্কাইয়ার মন্ত্রকও আগামী সপ্তাহে বিলটি রাজ্যসভায় আলোচনায় তুলতে আগ্রহী। বেঙ্কাইয়া নিজেও সব পক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ যেন বিলটি পাশ করানোর ব্যাপারে সহযোগিতা করে।
সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে বিলটি লোকসভায় আনা হলে তা বাতিল হয়ে যাবে— এ কথা মাথায় রেখেই মনমোহন সিংহের সরকার তা রাজ্যসভায় পেশ করেছিল। বিলটি পাঠানো হয় স্থায়ী কমিটিতে। ২০১৪-র ফেব্রুয়ারি মাসে ওই কমিটি তার রিপোর্ট পেশ করে। নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বিলটি ফের রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়। তারা গত বছর ৩০ জুলাই রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছে। মাকেনের বক্তব্য, ‘‘সেই থেকে বিলটি ঝুলে রয়েছে। ভুগছেন ক্রেতারা।’’