Indian National Congress

মেহবুবার প্রস্তাব ফেরাল কংগ্রেস

জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়া নিয়ে মেহবুবা মুফতির প্রস্তাব ফেরাল কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৪:২৪
Share:

মেহবুবা মুফতি।

জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়া নিয়ে মেহবুবা মুফতির প্রস্তাবে আগ্রহী নন রাহুল গাঁধী। ওই রাজ্যে বিজেপি সরকার থেকে বেরিয়ে আসার পরে এখন নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া মেহবুবা। তাই কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেস সেই ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। এ দিন দলের কাশ্মীর সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকের পরে কংগ্রেস নেতৃত্ব আজ তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন। দলীয় সূত্র বলছে, এই মুহূর্তে কাশ্মীরে সরকার গড়ার ঝুঁকি নিতে রাজি নন খোদ রাহুল গাঁধীই।

Advertisement

উপত্যকায় সরকার গড়ার প্রশ্নে কংগ্রেসকে রাজি করাতে গত শুক্রবার থেকে দিল্লিতে রয়েছেন মেহবুবা। চেষ্টা করেন সনিয়া গাঁধীর সঙ্গেও যাতে বৈঠক করা যায়। ৮৭ আসনের জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় সরকার গড়তে প্রয়োজন ৪৪ জনের সমর্থন। মেহবুবার দল পিডিপি-র বিধায়ক সংখ্যা ২৮। কংগ্রেসের ১২। জম্মু-কাশ্মীরের বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদকে মেহবুবা বোঝান, দু’দল হাত মেলালে গরিষ্ঠতার জন্য দরকার মাত্র আরও চার জনের সমর্থন। জোট হলে চার নির্দল বিধায়কের সমর্থন তিনি অনায়াসে জোগাড় করে ফেলবেন।

কংগ্রেসের কাশ্মীর সংক্রান্ত বিষয়ের ভারপ্রাপ্ত কমিটির নেতা হলেন মনমোহন সিংহ। আজ তাঁর বাড়িতে মেহবুবার প্রস্তাব নিয়ে বৈঠকে বসেন মনমোহন, গুলাম নবি আজাদ, অম্বিকা সোনিরা। বৈঠকে আপাতত মেহবুবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে ওই কমিটি। বৈঠকের শেষে অম্বিকা জানান, কংগ্রেস কাশ্মীরে রাজ্যপাল শাসনের পরিবর্তে নির্বাচনের পক্ষে।

Advertisement

জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়ার সুযোগ পেয়েও কেন হাত বাড়াচ্ছে কংগ্রেস? অম্বিকা সরাসরি উল্লেখ না করলেও দলীয় সূত্রের খবর, খোদ কংগ্রেস সভাপতি এটা চাইছেন না। এটা ঘটনা, সাম্প্রতিক কোনও বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে হননি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল। কার্যত তাঁর সক্রিয়তার কারণে কর্নাটকে হতাশ হতে হয়েছে বিজেপির চাণক্য অমিত। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়ার প্রশ্নে রাহুল তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, জোড়াতালি দিয়ে সরকার গড়ে ফেললেও, উপত্যকার নিরাপত্তার বিষয়টি দিল্লি থেকেই নজরদারি চালাবে কেন্দ্র। জঙ্গি দমনের প্রশ্নে রাজ্য প্রশাসনের উপরে সর্বক্ষণ ছড়ি ঘোরাবেন নরেন্দ্র মোদী, অজিত ডোভালরা। ফলে প্রতি মুহূর্তে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত বাঁধার পরিস্থিতি তৈরি হবে জোট সরকারের। উপরন্তু সরকারে বসলে গত চার বছরে বিজেপির কারণে কাশ্মীরের পরিস্থিতির যতটা অবনতি হয়েছে, তার দায় পরোক্ষে কংগ্রেসের ঘাড়ে এসে চাপবে। যার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে লোকসভা ভোটেও। তাই সব দিক বিবেচনা করেই এখনই সরকার গড়ার খেলায় নামতে চাইছে না কংগ্রেস।

কিন্তু মেহবুবা মরিয়া। কারণ তিনি বুঝতে পারছেন, বিজেপির সঙ্গে সরকার চালিয়ে চার বছরে তাঁর ও পিডিপির জনপ্রিয়তা তলানিতে এসে ঠেকেছে। উপরন্তু ২৫টি আসন পাওয়া বিজেপি এখন পিডিপিতে ভাঙন ধরিয়ে সরকার গড়তে সক্রিয় রয়েছে। এ জন্য পিডিপির এক তৃতীয়াংশ বিধায়ককে একসঙ্গে টানতে চাইছে, যাতে তাঁদের দলত্যাগ-বিরোধী আইনের কোপে পড়তে না হয়। ফলে অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদটাই এখন সবচেয়ে বড় মেহবুবার কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন