নোটা
মে মাসে রাজ্যসভার ভোট ঘোষণা করেও রহস্যজনক ভাবে তা তিন মাস পিছিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তার পর কংগ্রেস ভাঙা নিয়ে বিস্তর জলঘোলার পরে, ভোটের ঠিক এক সপ্তাহ আগে আজ কমিশনের ঝুলি থেকে বেরলো ‘নোটা’। আর তা নিয়েই দিল্লি থেকে আমদাবাদ— ধুন্ধুমার কাণ্ড।
নোটা— অর্থাৎ কাউকে ভোট না দেওয়ার বিকল্প। গুজরাতের নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, এ বার রাজ্যসভা ভোটেও থাকবে ‘নোটা’ বিকল্প। দিল্লির নির্বাচন কমিশনের নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত। রাজ্যসভায় আজ এ নিয়ে একজোট হয়ে হইচই করল সমবেত বিরোধীরা। বিকেলে নির্বাচন কমিশনে গিয়েও নালিশ জানাল কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, রাজ্যসভার ভোটে কখনও ‘নোটা’ ব্যবহার করা হয়নি। কংগ্রেসের প্রার্থী আহমেদ পটেলকে হারাতে বিজেপি তাদের দল ভাঙতে চাইছে। তাঁকে হারানোর জন্যই এ বার ‘নোটা’ এল।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে সব দলকে ডাক মুখ্যমন্ত্রীর
অরুণ জেটলির যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই ইউপিএ জমানায় ‘নোটা’ চালু হয়েছিল। তখন কংগ্রেস চুপ ছিল। ঠিক-ভুল যাই হোক, এখন সংসদে হল্লা করে লাভ কী? অভিযোগ থাকলে বিরোধীরা আদালতে যাক। গুলাম নবি আজাদ বলেন, এত দিন কাশ্মীরে দুটি সংবিধানের কথা শোনা গিয়েছে। আর আজ দেখা গেল, গোটা দেশে একরকম আর গুজরাতের জন্য ভিন্ন সংবিধান। আর যাঁকে হারানো নিয়ে এত বিতর্ক, সেই আহমেদ পটেল বলেন, ‘‘ভোট পিছনো হল, এখন নোটা আনা হল, নির্বাচন কমিশনই জানে এ সবের কারণ।’’ কংগ্রেসের ভয়, বিধায়করা নোটায় ভোট দিলে হেরে না যান পটেল!
কিন্তু কমিশনের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে ২০১৪ সাল থেকেই রাজ্যসভা ভোটে নোটা ব্যবহার করা হচ্ছে। যেখানে কোনও ভোট ছাড়াই প্রার্থী জিতে যান, সেখানে নোটা প্রয়োগের প্রশ্নই নেই। কিন্তু ভোটাভুটি হলেই রাখা হয় নোটা বিকল্প। গুজরাতে সেটাই হচ্ছে।
এই চাপের মধ্যেই সনিয়া গাঁধীর নির্দেশ, দলের কোনও বিধায়ক যদি নোটায় ভোট দেন, তা হলে তাঁকে বিধায়ক পদ খোয়াতে হবে। এই নির্দেশ পেয়ে গুজরাত কংগ্রেস নিজের বিধায়কদের ইতিমধ্যেই হুইপ জারি করে দিয়েছে।