সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী ও মনমোহন সিংহ।- ফাইল চিত্র।
ইলেকট্রনিক ভোটযন্ত্র (ইভিএম)-এর আর দরকার নেই। অন্য গণতান্ত্রিক দেশগুলির মতো ভারতেও আবার কাগজের ব্যালটের মাধ্যমেই ভোট নেওয়া হোক।
৮ বছর পর অনুষ্ঠিত দলের ৮৪তম প্লেনারি সেশনে শনিবার কংগ্রেসের রাজনৈতিক প্রস্তাবে এই দাবি জানানো হয়েছে। দিল্লিতে দু’দিনের ওই প্লেনারি সেশনে এ দিন রাহুল গাঁধীর সভাপতিত্বে কংগ্রেসের ওই রাজনৈতিক প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যে সন্দেহ, সংশয় দেখা দিয়েছে, তা দূর করতেই এই দাবি।’’
প্রস্তাবে এও বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে আবার কাগজের ব্যালটের মাধ্যমে ভোট নেওয়ার পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়া উচিত নির্বাচন কমিশনের। ভারতে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চালু হয়েছে প্রায় দু’দশক আগে।
আরও পড়ুন- বিদ্বেষের কারবারি! দলীয় প্লেনারি থেকে রাহুলের তোপ বিজেপি-কে
আরও পড়ুন- মাল্য কাণ্ডে দায়ী ভারতের ব্যাঙ্কগুলি, বলল ব্রিটিশ আদালত
তবে কাগজের ব্যালটের মাধ্যমে ভোট নেওয়ার পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার এই দাবি কিন্তু নতুন নয়। খাতায়-কলমে এআইসিসির তরফে এই প্রথম ওই দাবি জানানো হলেও, আজ থেকে ৯ বছর আগে, ২০০৯ সালে একই দাবি জানিয়েছিলেন বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। তখন ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউপিএ সরকার। কেন্দ্রে এখনকার শাসক দল বিজেপি ছিল বিরোধী দল। কিন্তু সেই সময় ইভিএমের পক্ষে প্রযুক্তিবিদদের রিপোর্ট দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছিল।
নতুন করে সেই পুরনো দাবি ফের উঠতে শুরু করে গত বছর থেকে।
৪০৩ সদস্যের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার নির্বাচনে বিজেপি ৩২৫টি আসনে জয়ী হওয়ার পর বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা) নেত্রী মায়াবতী ইভিএমে কারচুপির অভিযোগে সরব হন। তার পর দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশের অন্য বিরোধী দলগুলিও মায়াবতীর সুরে সুর মেলায়।
এ সবের প্রেক্ষিতে গত বছর গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে ভোটারদের জন্য পেপার রিসিপ্ট ব্যবস্থা চালু হয়। যাতে ভোটাররা জেনে নিতে পারবেন, তাঁরা যে প্রার্থীকে ভোট দিতে চেয়েছেন ইভিএমের মাধ্যমে, সেই প্রার্থীই ভোট পেয়েছেন কি না।
কিন্তু তার পরেও ইভিএম নিয়ে অভিযোগে খামতি ছিল না বিরোধী দলগুলির।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের ফুলপুর ও গোরক্ষপুর কেন্দ্রের নির্বাচনের পর সমাজবাদী পার্টি (সপা) প্রধান অখিলেশ সিংহ যাদব অভিযোগ করেন, দুই পোলিং অফিসার ইভিএমে কারচুপি করে ভোটগ্রহণকে বিলম্বিত করে দিয়েছিলেন।