China

পাঁচ বছরে আটটি ডুবোজাহাজ, ভারত মহাসাগরে চিনের উপস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছে দিল্লির

গত পাঁচ বছর ধরে ভারত মহাসাগরে এমন কর্মকাণ্ড চলছে বলে সম্প্রতি গোয়েন্দাদের একটি রিপোর্টে বলা হয়। সোমবার বিষয়টি সামনে এনেছে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৪:২৮
Share:

ভারত মহাসাগরে বাড়ছে চিনের উপস্থিতি। ছবি: এএফপি।

পাকিস্তানে করিডরের কাজ প্রায় শেষ। এ বার মায়ানমারের বন্দর তৈরির পথে চিন। চতুর্দিক দিয়ে ভারতকে ঘিরে ফেলাই তাদের লক্ষ্য। তবে ভারত মহাসাগরেই সবচেয়ে বেশি সক্রিয় তারা। লাগাতার সেখানে ডুবোজাহাজ পাঠিয়ে চলেছে বেজিং। যার মধ্যে রয়েছে পরমাণু শক্তি চালিত আক্রমণকারী ডুবোজাহাজও। মাঝেমধ্যেই কলম্বো এবং করাচি হয়ে ভারতীয় জলসীমার কাছাকাছি এসে পড়ে সেগুলি। তাদের কর্মকাণ্ডে উদ্বেগ বেড়েছে নয়াদিল্লির। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পরিস্থিতির দিকে লাগাতার নজর রেখেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে উপকূল রক্ষীবাহিনীও।

Advertisement

গত পাঁচ বছর ধরে ভারত মহাসাগরে এমন কর্মকাণ্ড চলছে বলে সম্প্রতি গোয়েন্দাদের একটি রিপোর্টে বলা হয়। সোমবার বিষয়টি সামনে এনেছে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম। গোয়েন্দাদের ওই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তারা। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ভারত মহাসাগরে ৮টি ডুবোজাহাজ পাঠিয়েছে চিন। যার মধ্যে পরমাণু শক্তিচালিত আক্রমণকারী ডুবোজাহাজও ছিল। কলম্বো এবং করাচি হয়ে ভারতীয় জলসীমার কাছে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে সেগুলিকে। এক একটি ডুবোজাহাজ প্রায় একমাস করে কাটিয়ে গিয়েছে। নজরদারি এড়াতে বেশকিছু কৌশলও অবলম্বন করতে দেখা গিয়েছে তাদের। একের পর এক পরমাণু ক্ষমতাসম্পন্ন ডুবোজাহাজ পাঠায় না বেজিং। বরং পর্যায়ক্রমে একবার সাধারণ জাহাজ আর একবার পরমাণু ক্ষমতাসম্পন্ন ডুবোজাহাজ, এ ভাবে বদল ঘটাতে থাকে তারা।

ভারত মহাসাগরে চিনের উপস্থিতির কথা মেনে নিয়েছেন নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লানবা। তিনি জানান, ‘‘অক্টোবরেই টানা একমাস ধরে ভারত মহাসাগরে অবস্থান করছিল একটি চিনা ডুবোজাহাজ। কখনও আবার এমন হয়েছে যে, ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন জায়গায় একই সময়ে একাধিক জাহাজকে ঘুরে বেড়াতে করতে দেখা গিয়েছে। এডেন উপসাগরে একবার বেজিংয়ের জলদস্যু প্রতিরোধ বাহিনীর তিনটি জাহাজকে একসঙ্গে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘মার মার করে ওরা ছুটে আসছিল, প্রাণ বাঁচাতে স্যরকে ছেড়েই পালাই’​

আরও পড়ুন: খড়দহে সাত মাসের মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিলেন ইঞ্জিনিয়ার​

গতবছরই ভারত মহাসাগরে চিনা নৌবাহিনীর ১২টি বহর দেখা গিয়েছিল বলে নৌসেনাসূত্রে জানা গিয়েছে। যার মধ্যে ছিল তৃতীয় শ্রেণির ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী লুয়াঙ জাহাজ, ডুবোজাহাজে সরঞ্জাম সরবরহকারী জাহাজ চোঙমিঙদও। পরে সেটিকে আবার করাচি বন্দরেও দেখা যায়। এ দিকে গত কয়েক বছরে করাচি বন্দরে মোতায়েন চিনা নৌবহরের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। ভারত মহাসাগরে তাদের সন্দেহজনক গতিবিধির উপর তাই নজর রাখছে ভারত।

চিনাবাহিনী এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাশালী বাহিনী। বিশ্বমানের প্রযু্ক্তি রয়েছে তাদের হাতে। তার উপর আবার পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। দুই দেশ মিলে আচমকা চড়াও হলে ভারতীয় নৌবাহিনী কি তা সামাল দিতে পারবে? সেই প্রশ্নের জবাবে অ্যাডমিরাল লানবা বলেন, ‘‘ভারত মহাসাগর নিয়েই যত দুশ্চিন্তা আমাদের। তবে ২০৫০ সালের মধ্যে আমাদের হাতে ২০০ রণতরী এসে যাবে। বিমানের সংখ্যা দাঁড়াবে ৫০০। তখন আমরাও বিশ্বমানের বাহিনী হয়ে দাঁড়াব।’’

নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে সম্প্রতি ৫৬টি যুদ্ধজাহাজ এবং ছ’টি ডুবোজাহাজ কেনায় সায় দিয়েছে সরকার। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতের প্রথম বিমানবাহী রণতরী ‘বিক্রান্ত’-এর নির্মাণও প্রায় শেষ হয়ে হয়ে এসেছে। পরীক্ষা করে দেখতে ২০২০ সালেই সেটিকে জলে নামানো হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন