তাজমহলে ঢোকার আগে খুলতে হবে মাথায় জড়ানো গেরুয়া স্কার্ফ! দিন কয়েক আগে এমনই আজব ফতোয়ার মুখে পড়েছিলেন আগরায় আসা ৩৪ জন বিদেশি মডেল। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠতেই আজ মুখ খুলল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। সাফ জানাল, এমন নির্দেশের পিছনে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ কিংবা তাজমহলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ-এর কোনও আধিকারিকের হাত নেই।
গোড়ায় কিন্তু আঙুল উঠেছিল এদেরই দিকে। তা হলে? গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। ১২ এপ্রিল থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক সুপার মডেল প্রতিযোগিতা। তাতে যোগ দিতে আসা বিদেশি মডেলদের একটি দল আগরায় যান তাজমহল দেখতে। প্রখর তাপ থেকে বাঁচতেই তাঁদের কয়েক জন মাথায় গেরুয়া স্কার্ফ জড়িয়েছিলেন। যার কয়েকটিতে আবার ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা! দিব্যি ছিল ছুটির মেজাজ। কিন্তু তাজমহলে ঢোকার মুখেই ঘটে বিপত্তি। স্কার্ফ খুলে ফেলতে বলা হয় মডেলদের। অগত্যা সেই নির্দেশ মেনেই তাজমহলে ঢুকতে হয় ভিনদেশি অতিথিদের। মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় সেই ভিডিও। এবং এর প্রতিবাদে সুর চড়াতে শুরু বজরঙ্গ দল-সহ বেশ কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন। যে বা যাঁরা মডেলদের স্কার্ফ খুলতে বাধ্য করেছিলেন, তাঁদের যথাযোগ্য শাস্তি চেয়ে গত কাল ও আজ ঘেরাও-মিছিলও হয় তাজমহলের বাইরে। আজ হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকটি ডানপন্থী সংগঠনের ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রথমে জানা যায়, কর্তৃপক্ষের তরফেই এমন নির্দেশ এসেছে। গোড়ায় সিআইএসএফ-ও বলেছিল, ‘‘ধর্মীয় প্রতীক নিয়ে স্মৃতিসৌধে ঢোকার নিয়ম নেই। তাই এই সিদ্ধান্ত। তবে কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করাটা আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না।’’ যদিও কেন্দ্র আজ কোনও ভাবেই এর দায় নিতে চায়নি। বরং কেন্দ্রীয় পর্যটন এবং সংস্কৃতি মন্ত্রী মহেশ শর্মা বলেন, ‘‘তাজমহলে ঢোকার ক্ষেত্রে পোশাক বা স্কার্ফের রং নিয়ে কোথাও কোনও বিধিনিষেধ নেই।’’ তা হলে স্কার্ফ খুলে নিলেন কারা? কেন্দ্রের দাবি, ওঁরা বাইরের লোক। স্থানীয় পর্যটক কিংবা গাইডও হতে পারেন।