রাহুল গাঁধী।
প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে রাহুল গাঁধীর আসন বিতর্ক আরও তিক্ত হয়ে উঠল বিজেপি মুখপাত্রের মন্তব্যে।
প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ প্রথম সারিতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে বসার আসন পেলেও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর জায়গা হয় ষষ্ঠ সারিতে। বিষয়টি নিয়ে সব বিরোধী দলের তীব্র আক্রমণের মুখে বিজেপি মুখপাত্র জি ভি এল নরসিংহ রাও এক সময় বলে বসেন, ‘‘রাহুল তো ভিআইপি এনক্লোজারে বসার যোগ্যই নন!’’
রাহুলের আসন নিয়ে সমালোচনার মুখে নরেন্দ্র মোদী সরকারের যুক্তি, এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ‘ওয়ার্যান্ট অফ প্রিসিডেন্স’ মেনে ঠিক হয় কে বা কারা প্রথম সারিতে বসবেন। আর বিজেপির যুক্তি, ইউপিএ আমলে তাদের সভাপতিদেরও পিছনে বসার জায়গা দেওয়া হতো।
কিন্তু তাতে বিতর্ক থামছে না। বরং প্রশ্ন উঠেছে, শাসক দলের সভাপতিও তো প্রোটোকলের তালিকায় আসেন না। তা হলে অমিত শাহ কোন যোগ্যতায় প্রথম সারিতে বসলেন? আর রাহুল গাঁধীর ক্ষেত্রে কেন একই ‘সৌজন্য’ দেখাল না মোদী সরকার? শরদ যাদবের মতো প্রবীণ রাজনীতিকের যুক্তি, মোদী সরকার সৌজন্য দেখালে তাদেরই মর্যাদা বাড়ত। শরদ যাদবের মন্তব্য, ‘‘দ্বিতীয় বৃহত্তম দলের সভাপতিকে ষষ্ঠ সারিতে পাঠানোটা ওঁর অপমান নয়, গণতন্ত্রের অপমান। অতীতে কখনও এমন হয়নি।’’
কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদের কথায়, ‘‘এটা প্রোটোকলের বিষয় নয়, সৌজন্যের প্রশ্ন। ক্ষমতাসীন দল ভাবছে, কে কোথায় বসছে, তা দিয়ে তাঁর সম্মান ঠিক হবে!’’ গোটা বিতর্ক অন্য মাত্রা পায় বিজেপি মুখপাত্র নরসিংহ রাওয়ের মন্তব্যে। যা শুনে কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘এ থেকেই বিজেপির মনোভাব স্পষ্ট।’’
রাহুল অবশ্য এ নিয়ে কাউকে দোষারোপ করেননি। বস্তুত তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ। ২৬ জানুয়ারি সকালে হাসিমুখেই ছয় নম্বর সারিতে বসে প্যারেড দেখেছেন। প্রশ্ন করলে বলেছেন, ‘‘এ সবকে আমি পরোয়া করি না!’’ কংগ্রেসের একাংশের মত ছিল, রাহুল টিকিট কেটে আমজনতার সঙ্গে বসুন। তাতে মোদী সরকারকে লজ্জায় ফেলা যাবে।
কিন্তু পরিণত রাজনীতিকের মতো রাহুল সেই রাস্তায় হাঁটেননি। বরং সকালে প্যারেডের পরে রাষ্ট্রপতি ভবনে ‘অ্যাট হোম’ অনুষ্ঠানে হাজির থেকেছেন। নরেন্দ্র মোদী তাঁর সঙ্গে করমর্দন করলে হাসিমুখেই শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।