অভিযুক্ত: বিকাশ বরালা
চণ্ডীগড়ের ঢেউ আছড়ে পড়ল দিল্লিতে।
বিজেপি সূত্র বলছে, বর্ণিকা-হেনস্থার ঘটনায় হরিয়ানা রাজ্য বিজেপি সভাপতির ছেলের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেছেন। চণ্ডীগড় প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও।
মদ্যপ অবস্থায় বর্ণিকা কুণ্ডূকে গাড়ি নিয়ে ধাওয়া ও কটূক্তি করার অভিযোগে হরিয়ানার রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুভাষ বরালার ছেলে বিকাশ ও তাঁর বন্ধু আশিস কুমারকে প্রথমে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বর্ণিকা পুলিশকে পুরো ঘটনাটির বর্ণনা দিয়ে বলেছিলেন, পুলিশ নিজেই প্রয়োজনীয় ধারায় অভিযোগ দায়ের করুক। কিন্তু দেখা যায়, পুলিশের এফআইআরে ‘অপহরণের চেষ্টার’ উল্লেখ নেই। সহজেই জামিন পেয়ে যান বিকাশ ও আশিস। বিজেপি সভাপতির ছেলে হওয়াতেই বিকাশের নামে অপহরণের (যেটি জামিনঅযোগ্য অপরাধ) অভিযোগ দায়ের করা হয়নি এবং তাঁরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন, এই অভিযোগে সরব বিরোধী শিবির।
আরও পড়ুন:বর্ণিকার পাশে বাবা, বললেন মাথা নত করবো না
সুভাষ দলীয় সভাপতি অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় কিরণ খেরের মতো দু’-একজন বিজেপি নেতা ছাড়া মুখে কুলুপ দিয়েছে গোটা দল। তবে আজ অমিত শাহের নির্দেশে হরিয়ানার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অনিল জৈন সুভাষ বরালাকে ফোন করে বলেছেন, তিনি যেন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টারের সঙ্গে দেখা করে অবস্থান স্পষ্ট করে দেন। পঞ্জাবি খট্টারকে মুখ্যমন্ত্রী করায় জাতিগত ভারসাম্য রাখতে জাঠ নেতা সুভাষ বরালাকে হরিয়ানার সভাপতি করা হয়েছিল। নির্বাচনমুখী রাজ্যে তাই বুঝেসুঝেই এগোতে চাইছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি রামবীর ভাট্টির মতো নেতারা অভিযুক্তের হয়েই সুর চড়িয়েছেন। রামবীর বলেন, ‘‘বর্ণিকাকে কেন রাতে একা ঘোরার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল? মেয়েদের রাত করে বাইরে ঘোরার অনুমতি দেওয়া উচিত নয় বাবা-মায়ের।’’
গোটা ঘটনা থেকে ফায়দা নিতে তৎপর কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা আজ দিল্লিতে বলেন, ‘‘বিজেপি সভাপতির অবিলম্বে ইস্তফা দেওয়া উচিত।’’ রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের যুক্তি, পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করছে। মুখ্যমন্ত্রী খট্টারও জানিয়েছেন, দোষীদের ছাড়া হবে না। যদিও কংগ্রেসের অভিযোগ, ‘‘প্রমাণ লোপ করতে সময় কাটানোর কৌশল নিয়েছে খট্টার প্রশাসন।’’
চণ্ডীগড়ের এসএসপি ইশ সিঙ্ঘল অবশ্য বলছেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক চাপ নেই।’’ বিকাশদের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ না-আনা প্রসঙ্গে তাঁর সাফাই, ‘‘প্রয়োজনে আরও ধারা যোগ করা হবে।’’ যা শুনে এক কংগ্রেস নেতার কটাক্ষ, ‘‘মোদী সরকার বেটি বাঁচাও প্রকল্প নিয়েছে। আর হরিয়ানায় চলছে বেটা বাঁচাও!’’ কাল সংসদের উভয় কক্ষেই এই ঘটনা নিয়ে সরব হবে বিরোধীরা।