প্রতীকী ছবি।
শুরু থেকেই অভিযোগ, পরীক্ষা কম হচ্ছে বলে করোনাভাইরাসে সংক্রমিতদের প্রকৃত সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, বাছবিচার না করে সমাজের বিভিন্ন অংশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করলে তবেই বোঝা যাবে, সংক্রমণের শিকড় কতটা গভীরে পৌঁছেছে। যদিও বাছবিচার না করে পরীক্ষার ব্যাপারে এখনও নীতিগত ভাবে নারাজ স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে বিভিন্ন মহলের চাপে অ্যান্টিবডি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তা-ও মূলত যে সব এলাকায় সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছে, সেই হটস্পটগুলিতে। কিন্তু সেই অ্যান্টিবডি পরীক্ষা সংক্রমণ রোখার প্রশ্নে কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে আজ স্বাস্থ্য কর্তাদের উত্তরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
গত সপ্তাহেই দাবি করা হয়েছিল, বুধবারের মধ্যে দেশে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা শুরু হবে। কিন্তু আজ শনিবার, সাংবাদিক সম্মেলনে আইসিএমআরের ভাইরোলজি ও কমিউনিকেবল ডিজিজ শাখার প্রধান রমন গঙ্গাখেদকর জানান, যাদের কিট দেওয়ার কথা, তারা আরও এক-দুদিন সময় নেবে। কিট পেলেই তা ব্যবহার করা হবে। যার অর্থ, ওই কিট হাতে পেয়ে তা রাজ্যগুলিকে পাঠিয়ে পরীক্ষা শুরু হতে আগামী সপ্তাহের অর্ধেক পেরিয়ে যাবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-এর মতে, অ্যান্টিবডি কিট মূলত গবেষণার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। তা হলে ওই কিট ব্যবহার করে লাভ কী হবে?
গঙ্গাখেদকর জানান, ওই কিটের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না, তা জানা সম্ভব। এই পরীক্ষার লাভ মূলত দুটি। প্রথমত- হটস্পটে কত লোকের মধ্যে ওই সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তা জানতে ওই পরীক্ষা কার্যকর। মাথায় রাখতে হবে, কারও শরীরে ওই অ্যান্টিবডি পাওয়ার অর্থ হল, তিনি কোনও না কোনও ভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁর নতুন করে সংক্রমণের সম্ভাবনা কম। কিন্তু ওই অ্যান্টিবডি তৈরি হতে সময় লাগে অন্তত আট থেকে দশ দিন। ফলে কোনও ব্যক্তি যদি সদ্য সংক্রমিত হন এবং তাঁর যদি উপসর্গ না থাকে, তা হলে তার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরির আগে ওই পরীক্ষা করা হলে কোনও লাভই হবে না। ফলে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা কত, তা অজানাই থেকে যাবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, মূলত স্টেজ থ্রি-তে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেলে তা কতটা ছড়িয়ে পড়েছে, তা বোঝার জন্য ওই পরীক্ষা করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, এখনও ভারত দ্বিতীয় স্টেজে রয়েছে। তা হলে কেন ওই কিট আনা হচ্ছে? স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, যদি পরে গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, তার কথা ভেবেই আগেভাগে ওই কিট আনা হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত-ধরা যাক, কোনও স্বাস্থ্যকর্মী অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় পজিটিভ হলেন। অর্থাত, তিনি অতীতে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ায় তাঁর শরীরে ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার অ্যান্টিবডি বা প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গিয়েছে। এর পরে চিরাচরিত পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে করোনা সংক্রমিত এলাকায় গিয়ে চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজ করার ছাড়পত্র দেওয়া হবে তাঁকে।