লাগাতার অক্সিজেনে ঘাটতির অভিযোগ উঠে আসছে। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের কোথাও অক্সিজেনে ঘাটতি নেই। ইচ্ছাকৃত ভাবে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। একের পর এক হাসপাতালের বাইরে অক্সিজেন নেই লেখা বোর্ড ঝুলতে দেখা গেলেও রবিবার এমনটাই দাবি করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু তার পর দু’দিন কাটতে না কাটতেই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার করুণ চিত্র উঠে এল। আগরার একটি হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে পর পর ৮ রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। জেলা প্রশাসনও অক্সিজেনে ঘাটতির কথা মেনে নিয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় আগরার পারস হাসপাতালে ওই ৮ জন করোনা রোগী মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতালের কর্মী তনু চতুর্বেদী জানান, অক্সিজেনে ঘাটতি দেখা দেয়। তার জেরেই মৃত্যু হয় ওই ৮ করোনা রোগীর। জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আগরার জেলাশাসক প্রভু সিংহও অক্সিজেনে ঘাটতির কথা মেনে নেন। তিনি বলেন, ‘‘গত ২৪ ঘণ্টায় অক্সিজেনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। খুব শীঘ্র সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হঠাৎ রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়াতেই অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে।”
তবে শুধু পারস হাসপাতালই নয়, আগরার একাধিক হাসপাতালেই অক্সিজেনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তার জেরে অনেকে হাসপাতাল রোগী ভর্তি বন্ধ করে দিয়েছে। কোথাও কোথাও আবার হাসপাতালের বাইরে বোর্ড ঝুলছে, যাতে লেখা রয়েছে, ‘প্রিয়জনকে ভালবাসলে নিজেরাই অক্সিজেন জোগাড় করে আনবেন’। আগরার প্রভা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আবার রোগীর পরিজনদের হাতে খালি সিলিন্ডার তুলে দিচ্ছেন। সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে একটি চিরকূট, যাতে অক্সিজেন ভরতে গিয়ে কেনও সমস্যা হলে রোগীর অবস্থা কতটা গুরুতর, তা ওই চিরকূট দেখিয়ে বোঝানো যায়। হাসপাতালের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অক্সিজেনের জোগান না পেলে রোগীদের বাঁচানো যাবে না।’’
জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ভগবতী হাসপাতালের ম্যানেজার জারিখা খান জানিয়েছেন, কোভিড রোগীদের পরিজনদের তাঁরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে হাসপাতালে অক্সিজেন নেই। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসনকে হাজার ফোন, ইমেল করেও অক্সিজেনের জোগান পাইনি আমরা। যেখানে অক্সিজেনের সন্ধান পাবেন, সেখানে রোগীদের সরিয়ে নিয়ে যেতে বলেছি তাঁদের পরিজনদের।’’
শুধু অক্সিজেনই নয়, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত রেমডেসিভির ইঞ্জেকশনও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছে আগরার একাধিক হাসপাতাল। তাদের দাবি, যা পাওয়া যাচ্ছে তার সবটাই দালালদের হাত ঘুরে আসছে। ফলে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী জন ঔষধি কেন্দ্রগুলিতেও রেমডেসিভির পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও, হাসপাতালে শয্যার অভাব নেই বলে সাফাই দিয়েছেন আগরার জেলাশাসক প্রভু। সরকার সকলকে সাধ্য মতো সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।