Coronavirus in India

ভোটের কাজে গিয়ে মৃত্যু অন্তঃসত্ত্বারও

মাসখানেক হল শিক্ষিকা হিসেবে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন জৌনপুরের বাসিন্দা কল্যাণী অগ্রহরী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২১ ০৬:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ করতে গিয়ে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক শিক্ষিকার। পরিবারের অভিযোগ, ওই শিক্ষিকা আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তিনি ভোটের কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে কার্যত হুমকি দিয়ে ওই কাজে যেতে বাধ্য করা হয়। পরিণতিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু। দিনকয়েক আগে ঘটনাটি ঘটেছে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে। এই ঘটনার জেরে আগামী ২ মে ভোটগণনা প্রক্রিয়া বয়কটের ডাক দিয়েছে আরএসএস অনুমোদিত রাষ্ট্রীয় শিক্ষক মহাসঙ্ঘ।

Advertisement

মাসখানেক হল শিক্ষিকা হিসেবে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন জৌনপুরের বাসিন্দা কল্যাণী অগ্রহরী। এর পরেই তাঁকে পঞ্চায়েত ভোটের কাজে যাওয়ার নির্দেশ দেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে, ওই কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন ২৮ বছরের ওই শিক্ষিকা। পরিবারের অভিযোগ, ভোটের কাজে না-গেলে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে এবং বেতন পাবেন না বলে হুমকি দেওয়া হয়। ফলে বাধ্য হয়েই ভোটের কাজে যেতে হয় কল্যাণীকে। তাঁর স্বামী দীপক বলেন, ‘’১৫ এপ্রিল ভোটগ্রহণ ছিল। প্রশিক্ষণের জন্য তার আগের দিনই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছে গিয়েছিল কল্যাণী। ভোটের দিন ১২ ঘণ্টা কাজ করেছিল। বাড়ি ফিরল অসুস্থ হয়ে। দু’দিন পর থেকেই জ্বর।’’

পরিবারের তরফে জানানো হয়, জ্বর কমছে না দেখে হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করা হয়। কল্যাণীর বাবা সুরেশ কুমার জানিয়েছেন, একের পর এক হাসপাতাল তাঁর মেয়েকে ফিরিয়ে দিয়েছে। বলা হয়েছে শয্যা ফাঁকা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা যখন ৪০-এর কাছাকাছি তখন কোভিড পরীক্ষা করা হয় এবং অক্সিজেনের ব্যবস্থা হয়। ততক্ষণে অনেক সময় পার হয়ে গিয়েছে। পরে মহিলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ২৪ এপ্রিল কল্যাণী মারা যায়। জোর করে ভোটের কাজে পাঠানো হল… একে খুন ছাড়া কী বলবো?’’ পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে করোনার উল্লেখ রয়েছে। কল্যাণীর স্বামী জানিয়েছেন, গত ২৬ এপ্রিল তাঁদের তৃতীয় বিবাহ বার্ষিকী ছিল।

Advertisement

ঘটনার জেরে যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। অভিযোগ, জোর করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভোটের কাজে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে কোভিড-বিধির বালাই নেই।

ইতিমধ্যেই ভোটের কাজ করতে গিয়ে ১৩৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রাণ হারিয়েছেন বলে অভিযোগ। কল্যাণীর মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে শো-কজ করেছে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। যোগী প্রশাসনের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতিতে তাঁরা পঞ্চায়েত ভোট করাতে চাননি। কিন্তু হাই কোর্টের নির্দেশে তা করতে হয়েছে। জৌনপুরের এসডিএম সদর জানিছেন, ওই শিক্ষিকার মৃত্যুর ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। কী ভাবে পরিবারকে সাহায্য করা যায় তা প্রশাসন খতিয়ে দেখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন